প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কমতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-১৫ ০৯:১৩:০৮


কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক গ্যাসে একের পর এক রেকর্ড করে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। উত্তোলন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির ব্যবহার ক্রমে বাড়ছে। চলতি বছরও এ ধারা অব্যাহত থাকতে পারে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে আগামী বছর দেশটিতে প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্তোলন ও চাহিদা উভয়ই কমে যেতে পারে। দেশটির এনার্জি ইনফরমেশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইআইএ) সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে। খবর রয়টার্স।

ইআইএর সর্বশেষ শর্ট টার্ম এনার্জি আউটলুকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কূপগুলো থেকে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ২২৪ কোটি ঘনফুট ড্রাই প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছিল, যা ছিল দেশটির ইতিহাসে পণ্যটির সর্বোচ্চ উত্তোলন। চলতি বছর দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন আরো বেড়ে ৯ হাজার ৫২৮ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় এবার প্রাকৃতিক গ্যাসের উত্তোলন দৈনিক গড়ে ৩০৪ কোটি ঘনফুট বাড়তে পারে।

তবে ২০২১ সালে দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন কমে আসতে পারে। ইআইএর তথ্য অনুযায়ী, আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে দৈনিক গড়ে ৯ হাজার ২৬২ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলন হতে পারে। অর্থাৎ চলতি বছরের সর্বোচ্চ রেকর্ডের পর আগামী বছর দেশটিতে জ্বালানি পণ্যটির উত্তোলন দৈনিক গড়ে ২৬৭ কোটি ঘনফুট কমে যেতে পারে। ইআইএর এ পূর্বাভাস সত্যি হলে তা হবে ২০১৬ সালের পর থেকে প্রথমবারের মতো দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে নিম্নমুখী প্রবণতা।

একই পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে দেশটির প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদার ক্ষেত্রে। তথ্যমতে, ২০২১ সালে দেশটিতে জ্বালাটি পণ্যটির ব্যবহার কমে দৈনিক গড়ে ৮ হাজার ৫৬১ কোটি ঘনফুটে নামতে পারে। চলতি বছর দেশটিতে পণ্যটি ব্যবহারের পরিমাণ দাঁড়াতে পারে দৈনিক গড়ে ৮ হাজার ৭২৭ কোটি ঘনমিটারে। মূলত দেশটির বিদ্যুৎ খাতে জ্বালানিটির চাহিদা হ্রাস এর পেছনে মূল প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে। প্রাকৃতিক গ্যাসের পরিবর্তে এ সময় সৌর, বায়ু ও জলশক্তির মতো নবায়নযোগ্য শক্তির উেসর দিকে ঝুঁকতে পারে দেশটি।

২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার দাঁড়িয়েছিল দৈনিক গড়ে ৮ হাজার ৪৯৭ কোটি ঘনফুট, যা ছিল পণ্যটির রেকর্ড ব্যবহার। সে হিসাবে আগের বছরের রেকর্ড ভেঙে চলতি বছর পণ্যটির ব্যবহার দৈনিক গড়ে ২৩০ কোটি ঘনফুট বাড়লেও, আগামী বছর তা দৈনিক গড়ে ১৬৬ কোটি ঘনমিটার কমে যেতে পারে। ২০১৭ সালের পর এটাই হতে পারে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যটির ব্যবহারের প্রথম পতন।

তবে উল্টো পরিস্থিতি বজায় থাকতে পারে দেশটি থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস রফতানির ক্ষেত্রে। ইআইএর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৯ সালে দেশটি থেকে দৈনিক গড়ে ৫৩৯ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস আন্তর্জাতিক বাজারে রফতানি হয়েছে, যা ছিল দেশটি থেকে পণ্যটির সর্বোচ্চ রফতানি। চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি পণ্যটির রফতানি আরো বেড়ে দৈনিক গড়ে ৭২০ কোটি ঘনফুটে উন্নীত হতে পারে। আর ২০২১ সালে তা দৈনিক গড়ে ৮৯০ কোটি ঘনফুটের রেকর্ড ছুঁতে পারে। ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্র গত ৬০ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মতো প্রাকৃতিক গ্যাসের নিট রফতানিকারকে পরিণত হয়। এরপর থেকে প্রতি বছরের শেষে দেশটি থেকে জ্বালানি পণ্যটির রফতানি ক্রমে বাড়ছে।

২০২১ সাল নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রের বিদ্যুৎ খাতে প্রাকৃতিক গ্যাসের হিস্যা কমে ৩৭ শতাংশে নামতে পারে। ২০১৯ সালে যা ছিল ৩৯ শতাংশ। একই সঙ্গে আগামী বছরের মধ্যে দেশটির বিদ্যুৎ খাতে কয়লার ব্যবহারও কমে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস করেছে ইআইএ। চলতি ও আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্রে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের হিস্যা দাঁড়াতে পারে ২১ শতাংশ। ২০১৯ সালে যা ছিল ২৪ শতাংশ।