বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ উপহার দিয়েছেন বলেই তিনি জাতির পিতা
নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৩-১৭ ২৩:১৯:৪৪
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নামের এ দেশটি তিনি উপহার দিয়েছেন। দিয়েছেন বাঙালিকে একটি জাতি হিসেবে আত্মপরিচয়ের মর্যাদা। তাই তো তিনি আমাদের জাতির পিতা।
তিনি বলেন, আজ থেকে শুরু হয়ে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ উদযাপন করা হবে। ২০২১ সালে উদযাপিত হবে আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিভিন্ন বন্ধুপ্রতীম দেশ, ইউনেস্কো, ওআইসিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা মুজিববর্ষ উদযাপনে অংশীদার হয়েছে।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুঃখী মানুষকে ক্ষুধা-দারিদ্র্য থেকে মুক্তি দিতে নিজের জীবনের সুখ-আরাম বিসর্জন দিয়ে তিনি আজীবন সংগ্রাম করেছেন। বারবার কারারুদ্ধ হয়েছেন। মানুষের দুঃখ-কষ্ট তাকে ব্যথিত করতো। অধিকারহারা দুঃখী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি দ্বিধা করেননি। এ বঙ্গভূমির বঙ্গ-সন্তানদের একান্ত আপনজন হয়ে উঠেছিলেন- তাই তিনি ‘বঙ্গবন্ধু’।
তিনি বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী (মুজিববর্ষ) উদযাপনে বছরব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আপনাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। দেশের ভেতরে এবং বাইরে অবস্থানরত দেশের সব নাগরিককে জানাই মুজিববর্ষের শুভেচ্ছা। একই সঙ্গে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি বিশ্ববাসীকে। আমার নিজের এবং ছোট বোন শেখ রেহানার পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি দেশের সব বয়সের এবং শ্রেণি-পেশার মানুষকে।
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে। তবে বছরব্যাপী নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমরা মুজিববর্ষ উদযাপন করবো। একই কারণে বিদেশি অতিথিদের সফর স্থগিত করা হয়েছে। ভুটানের মহামান্য রাজা জিগমে খেসার নমগেয়েল ওয়াংচুক, নেপালের মহামান্য রাষ্ট্রপতি বিদ্যা দেবী ভাণ্ডারি, ভারতের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি, জাতিসংঘের মহাসচিব এন্টিনিও গুতেরাস এবং ওআইসির মহাসচিব ড. ইউসুফ আল ওথাইমিনসহ বেশ কয়েকজন বিদেশি শুভাকাঙ্ক্ষী ভিডিও বার্তা পাঠিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আমি তাদের ব্যক্তিগতভাবে এবং দেশের জনগণের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, আজকের এ মাহেন্দ্রক্ষণে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। শ্রদ্ধা জানাচ্ছি ১৫ আগস্টের শহীদদের প্রতি। স্মরণ করছি জাতীয় চার নেতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সব শহীদদের। নির্যাতিত মা-বোন এবং যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। মুক্তিযোদ্ধাদের সালাম। আজ ১৭ মার্চ। ১৯২০ সালের আজকের দিনে এই বাংলায় জন্ম নিয়েছিলেন এক মহাপুরুষ। তিনি আমার পিতা, শেখ মুজিবুর রহমান। সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরও বলেন, অশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিনের প্রতি। আমরা মুজিববর্ষ পালনের সুযোগ পেয়েছি। এ যে আমাদের জীবনে কত বড় পাওয়া, তা ভাষায় বোঝাতে পারব না। আমি গভীর কৃতজ্ঞতা জানাই দেশবাসীর প্রতি- যারা আমার দল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে, পরপর তিনবার সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে মুজিববর্ষ উদযাপনের সুযোগ করে দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই মানুষের দুঃখ-কষ্টে ব্যথিত হতেন জাতির পিতা। অকাতরে বিলিয়ে দিতেন তার জামা-কাপড়, বই, ছাতা। যার যখন যা প্রয়োজন মনে করতেন, তাকে নিজের জিনিস দিয়ে দিতেন। নিজের খাবারও তিনি ভাগ করে খেতেন। দুর্ভিক্ষের সময় গোলার ধান বিলিয়ে দিতেন। মানুষের জন্য কিছু করতে পারার মধ্যেই তিনি আনন্দ পেতেন।