ঝুঁকিপূর্ণ স্থান ‘লকডাউন’র পরামর্শ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০২০-০৩-২১ ২০:০০:৪২
করোনা ভাইরাস পরিস্থিত পর্যবেক্ষণ করে দেশের যেসব স্থানে ঝুঁকি বেশি সেসব স্থানে লকডাউন করার পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। এমনকি প্রয়োজনে অবস্থার অবনতি হলে জরুরি অবস্থা জারিরও পরামর্শ দিয়েছে সংস্থাটি।
শনিবার (২১ মার্চ) দুপুরে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র মো. সাঈদ খোকনের বনানীর বাসভবনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এসব পরামর্শ দেয় ডব্লিউএইচও’র প্রতিনিধিরা। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন- ঢাকায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আবাসিক প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাবলিক হেল্থ ইমার্জেন্সি প্রধান ডা. ইআই সাক্কা হাম্মান, ইউএস সিডিসি কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টেটিভ মিহাল এ ফ্রাদমান, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ডিএসসিসির মেয়র সাঈদ খোকন।
সাঈদ খোকন বলেন, ‘ঢাকা একটি জনবহুল শহর; বাংলাদেশ একটি জনবহুল দেশ। এখানে সম্পূর্ণ লকডাউন করা কঠিন। তার পরেও তারা (বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা) ঢাকা কিংবা অন্য কোন এলাকা পার্শিয়াল (আংশিক) লকডাউন কিংবা ইমারজেন্সি (জরুরি অবস্থা) ঘোষণা করা যায় কিনা আমাদের সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। সেটি আমরা সরকারের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে পৌঁছে দেব।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আমাদের কাছে মনে হয়েছে বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি আগামী দিনে ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে। এটাকে প্রতিরোধের জন্য এখনই আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলা করতে হবে। সর্বশক্তি দিয়ে মোকাবিলার দুটি পদ্ধতি রয়েছে। একটি সরকার প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে সম্ভাব্য সব করণীয় করে যাচ্ছে। দ্বিতীয় বিষয় হচ্ছে- আমাদের নাগরিকদের সচেতন ও সতর্ক করে তোলা। এই দুইয়ের সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব।’
মেয়র আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিছু কিছু এলাকা আংশিক লকডাউন হয়েছে। আবার কোথাও কোথাও পুরোপুরি লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়া অনেক দেশেই এরই মধ্যে ইমারজেন্সি বা জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। লকডাউন এবং ইমার্জেন্সি ঘোষণা করার ফলে তারা ভালো ফলাফল পেয়েছেন। সেসব দেশে নতুন আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা হলেও ধীরগতি হয়েছে। কোথাও কোথাও আক্রান্তের সংখ্যা শূন্যে চলে এসেছে।’
সাঈদ খোকন বলেন, ‘আজকে আমাদের পর্যালোচনার সময় এসেছে। লকডাউন করলেও ঢাকাসহ অন্যান্য শহরে কীভাবে বা কত সময় লকডাউন করা যায় সেসব বিষয়ে পর্যালোচনা বিষয় রয়েছে।’
এসময় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. বর্ধন জং রানা বলেন, ‘আমরা তো এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারি না। এটা রাষ্ট্রের নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। আমরা কেউ ঝুঁকির বাইরে নেই। প্রত্যেকেই নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্ক হতে হবে। আপনি আপনার জায়গা থেকে সতর্ক হবেন, আমি আমার জায়গা থেকে সতর্ক হবো। ভাইরাসের তো আর কোনো হাত পা নেই। সে তার মত করে চলবে। আমরা পরামর্শ দিয়েছি বড় কোনো জনসমাগম যাতে না হয়। এরই মধ্যে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। শুধু বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নয়, বিশ্বের অন্যান্য স্বাস্থ্য সংস্থাও সরকারকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।’
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক প্রফেসর ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে লকডাউন ও জরুরি অবস্থার বিষয়গুলো সামনে আসছে। এটা তো আমরা বললে হবে না। এখানে সরকারের সিদ্ধান্তের বিষয় রয়েছে। সরকার যদি ভালো মনে করে তাহলে দেশ ও জনগণের স্বার্থে অবশ্যই এটা করতে পারে। তাই বলে সবাই যেন আতঙ্কগ্রস্ত না হয়।’