বাজারে ক্রেতা না থাকলেও নিত্যপণ্যে দাম উর্ধ্বগতি
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৩-২৬ ১৯:৩৭:৫৬
বাজারে ক্রেতা নেই বললেই চলে। তবু চড়া নিত্যপণ্যের বাজার। প্রতিটি সবজি কেজিপ্রতি পাঁচ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। চড়া দাম শাকেরও। কেজিপ্রতি তিন থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চাল। ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ২০ টাকা বাড়তি দামে।
লিটারে তিন থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে খোলা ভোজ্যতেলে। মাছের বাজারও চড়া। কেজিতে ১০ থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ। আর গরুর মাংসের দাম বাড়লেও কমেছে মুরগি ও ডিমের দাম। এছাড়া আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন মসলা। অপরিবর্তিত রয়েছে পেঁয়াজের দর।
ক্রেতার উপস্থিতি কম হলেও নিত্যপণ্যের বাজার চড়া নিয়ে ভিন্নমত দেখা গেছে ক্রেতা-বিক্রেতার মধ্যে। বিক্রেতারা বলছেন, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে বাজারে মালের সরবরাহ কমেছে, এ কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেড়েছে পণ্যের। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। আর ক্রেতারা বলছেন, করোনা আতঙ্ক নয়, বেশি মুনাফার আশায় সংকটকালীন সময়ে দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি নেই, এসময়ে দাম বাড়তি রাখার কারণ নেই।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) রাজধানীর মালিবাগ, মালিবাগ রেলগেট, খিলগাঁও, মতিঝিল টিঅ্যান্ডটি বাজার, ফকিরাপুল কাঁচাবাজার এবং শান্তিনগর কাঁচা বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।
দাম বেড়েছে গরুর মাংসের। প্রতিকেজি ২০ টাকা বেড়ে বর্তমানে বিক্রি করা হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিদরে। আগের চড়া দামেই বিক্রি মহিষ ও খাসির মাংসের দাম। মহিশের মাংস ৬০০ টাকা, খাসির মাংস ৮০০ টাকা, বকরি ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
তবে দাম কমেছে মুরগির। এসব বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার ১০ টাকা কমে বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, লেয়ার ২০০ টাকা থেকে ২১০ টাকা, সাদা লেয়ার ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, সোনালি ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাল ডিম প্রতি ডজন ৯৫ থেকে ১০৫ টাকা, দেশি মুরগি ১৫০ টাকা, সোনালি ১৪০, হাঁস ১৩০ টাকা, কোয়েল প্রতি ১০০ পিস ২০০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
দাম বেড়েছে মাছেরও। এসব বাজারে বর্তমানে প্রতিকেজি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১১৫০ থেকে ১২০০ টাকা, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০ টাকা থেকে ৭৫০, ছোট ইলিশ আকারভেদে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি দরে।
এছাড়া প্রতিকেজি কাঁচকি ৪০০ টাকা কেজি, মলা ৪০০ টাকা, ছোট পুঁটি (তাজা) ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৪০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি (গলদা) ৫০০ থেকে ৮৫০ টাকা, বাগদা ৪৫০ থেকে ১০০০ টাকা, দেশি চিংড়ি ৪০০ থেজে ৫০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মৃগেল ২২০ থেকে ৩৫০ টাকা, পাঙাস ১৪০ থেকে ১৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, কৈ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরিবর্তিত আছে পেঁয়াজের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে (মানভেদে) ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। প্রতিকেজি রসুন দেশি (মানভেদে) ৭০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না ১৩০ থেকে ১৫০, তিন কোয়া রসুন ১৮০, আদা ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।
দাম বেড়েছে খোলা সয়াবিন তেলের। খোলা সয়াবিন (লাল) বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা লিটার। বাড়তি দাম রাখা হচ্ছে চালের বাজারে। খুচরায় তিন থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে চালের বাজার। এসব বাজারে কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে মিনিকেট (নতুন) চাল বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি, মিনিকেট পুরান ৬২ টাকা, বাসমতি ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, কেজিতে আট টাকা বেড়ে প্রতি কেজি আটাশ চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৬ টাকা। আগের বাড়তি দামেই বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন মসলা।
বিক্রেতারা বলছেন, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কের কারণে এখন বাজারে মালের সরবরাহ কমেছে। এ কারণে পাইকারি বাজারে দাম বেশি। যার প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।
তবে তাদের সঙ্গে একমত নন হামিদা খাতুন নামে এক ক্রেতা। তিনি বলেন, মালের কোনো ঘাটতি নেই, ক্রেতাও তেমন নেই, এরপরও দাম বাড়ানো হচ্ছে বাজারে। মালের ঘাটতি না থাকলেও দাম বাড়ার কোনো কারণ থাকতে পারে না। এটা ব্যবসায়ীদের কারসাজি। সূত্র: বাংলানিউজ
সানবিডি/ঢাকা/এসএস