বগুড়া বিসিক শিল্প নগরীতে কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন অব্যাহত
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৫-০১ ১৯:৩৬:০৫
দেশের বৃহত্তম কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন কেন্দ্র বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)-এর বগুড়া শিল্পনগরীতে কৃষি যন্ত্রপাতিসহ অন্যান্য হালকা প্রকৌশল পণ্য উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। হাওড় অঞ্চলসহ দেশের অন্যান্য এলাকায় বোরো মৌসুমের ধান দ্রুত সংগ্রহে কৃষকদের কৃষি যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এ শিল্পনগরীর কার্যক্রম চলমান রাখা হয়েছে।
বিসিকের সূত্রে জানা যায়, বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীতে বিভিন্ন ধরনের ৪৫টি হালকা প্রকৌশল শিল্পকারখানা রয়েছে। করোনার প্রাদুর্ভাবজনিত পরিস্থিতিতে বিসিকের সার্বিক সহায়তা ও তত্ত্বাবধানে বর্তমানে এই শিল্প নগরীতে ৩৫টি শিল্প কারখানা চালু রয়েছে এবং গড়ে দৈনিক ১ কোটি টাকার অধিক মূল্যমানের হালকা প্রকৌশল যন্ত্রপাতি উৎপাদিত হচ্ছে। এসকল খুচরা যন্ত্রাংশ সমগ্র দেশের চাহিদা মিটিয়ে ভারত, নেপাল, ভুটানে রপ্তানি হয়ে থাকে।
বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী কর্মকর্তা এ কে এম মাহফুজুর রহমান জানান, দেশের কৃষি যন্ত্রাংশের মোট চাহিদার প্রায় ৭০ শতাংশ পূরণ করে থাকে বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী। কৃষিসহ বিভিন্ন খাতের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও কারখানাগুলোতে প্রতিদিন কৃষি যন্ত্রাংশ যেমন -সেন্টিফিউগাল পাম্প, পিস্টন, টিউবওয়েল, সিএনজি অটোরিক্সার ও জুটমিলের খুচরা যন্ত্রাংশ, মোটর সাইকেলের ব্রেক ড্রাম, নাট, বল্টুসহ অন্যান্য হালকা প্রকৌশল যন্ত্রাংশ উৎপাদন অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহ প্রতিবছর ভ্যাট-ট্যাক্স বাবদ ১৬৩ কোটি টাকা রাজস্ব প্রদান করে থাকে। এ শিল্পনগরীতে প্রায় ১০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
এ শিল্প নগরীর অন্যতম শিল্প প্রতিষ্ঠান মেসার্স মিলটন ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসের প্রোপ্রাইটর মোঃ আজিজার রহমান মিলটন জানান, দেশের কৃষি কাজে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে বিসিকের সার্বিক সহযোগিতায় তার প্রতিষ্ঠানে দৈনিক ৩০০ জন শ্রমিক স্বাস্থ্য বিধি মেনে ২৫ টনের অধিক সেন্টিফিউগাল পাম্প, পিষ্টন, টিউবওয়েলসহ অন্যান্য কৃষি যন্ত্রাংশ উৎপাদন করছে। এগুলোর মূল্য আনুমানিক ১৫ লক্ষ টাকা। তিনি আরো বলেন, তার প্রতিষ্ঠান উৎপাদিত কৃষি যন্ত্রাংশ দেশে বাজারজাতকরনের পাশাপাশি প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের রপ্তানি হয়ে থাকে। তবে, করোনা পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে রপ্তানি বন্ধ আছে।
উল্লেখ্য, সারাদেশ হালকা প্রকৌশল যন্ত্রাংশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৬৪ সালে ১৪ দশমিক ৬০ একর জায়গা নিয়ে যাত্রা শুরু করে বগুড়া বিসিক শিল্পনগরী। স্থানীয় শিল্প উদ্যোক্তোগণের চাহিদার কথা বিবেচনা করে ১৯৮০ সালে আরো ১৮ দশমিক ৬৭ একর জমিতে সম্প্রসারণ করে বতর্মানে ৩৩ দশমিক ১৭ একর ভূমির ওপর এ শিল্পনগরীর উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। বগুড়া বিসিক শিল্পনগরীর শিল্পমালিক ও স্থানীয় উদ্যোক্তাগণের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়া আরো ৩০০ একর আয়তনের আরেকটি বিসিক শিল্পনগরী প্রতিষ্ঠার প্রকল্প হাতে নিয়েছে বিসিক কর্তৃপক্ষ। শিল্পনগরীটি বাস্তবায়িত হলে প্রায় ১ লক্ষ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ সুষ্টি হবে এবং সরকারের প্রায় ১ হাজার কোটি টাকা বাৎসরিক রাজস্ব আয় হবে বলে জানান শিল্পনগরী কর্মকর্তা।
সানবিডি/এসকেএস