৮ দফা দাবি জানাল বিএনপি
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৫-০৫ ১৯:৫৮:৫৪
জাতীয় ঐক্যের ডাকে সাড়া না দিয়ে সরকার এককভাবে করোনাভাইরাস মোকাবিলা করতে গিয়ে লেজেগোবরে অবস্থা করে ফেলেছে বলে মনে করে বিএনপি। এই অবস্থায় দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে টাস্কফোর্স গঠনসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে দলটি।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে চলমান করোনা সংকটে দলের অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘সরকার বিভিন্ন কিস্তিতে এ পর্যন্ত ৯৫ হাজার ৬১৯ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করলেও এর সিংহভাগই ব্যাংক নির্ভর ঋণ প্যাকেজ যা ব্যবসায়ীদের দেওয়া হবে প্রচলিত ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে। এতে সরকারের প্রণোদনা নিতান্তই অপ্রতুল। ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে ঋণ দেওয়া হলে তা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা না পেয়ে সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট কিছু নব্য ধনী এতে লাভবান হবে।’
শপিংমল খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দোকানপাট খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তে করোনার পিক পয়েন্টে এসে সরকার পুনরায় সামাজিক সংক্রমণের পথ আরও সুগম করে দিলো। একটা মাস কি সেটা নিয়ন্ত্রণ করা যেতো না, একটা মাস নিয়ন্ত্রণ করে সুযোগ সৃষ্টি করা যেতো না। আসলে সরকার ব্যর্থ হয়েছে, সমাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যর্থতার কারণে আজকে দেশকে এক ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দিয়েছে।’
আট দফা দাবি তুলে ধরে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ছাড়া সরকারকে আন্তরিকভাবে জনগণের পাশে দাঁড়াতে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে দিন আনে দিন খায় মানুষদের ঘরে রাখতে জনপ্রতি মাসিক ৫ হাজার টাকা করে তিন মাস সাহায্য ও ঘরে খাবার পৌঁছে দিতে হবে। পাশাপাশি, স্বাস্থ্য এবং কৃষি ও শিল্পসহ অন্যান্য সেক্টরের জন্য আমাদের প্রদত্ত আর্থিক প্যাকেজ অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। গতানুগতিক বাজেট দিয়ে এ মহাসংকট উত্তরণ সম্ভব নয়। তাই প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতসহ অন্যান্য খাতে সরকারি কোষাগার থেকে অর্থ বরাদ্দ করে বিশেষ তহবিল গঠন করতে হবে; প্রয়োজনে প্রথাগত পদক্ষেপের বাইরে এসে সরকারের মনিটরিং ও ফিসক্যাল ব্যবস্থাপনায় বড় ধরনের সংস্কার আনা প্রয়োজন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে একটা টেকনিক্যাল কমিটি করেছে। সেখানে দেখবেন অনেক বরণ্যে চিকিৎসক বাদ পড়েছে এবং এই ধরনের ভাইরাল ডিজিজ নিয়ে যারা লেখাপড়া করেছেন তাদেরকে সম্পৃক্তই করা হয়নি। সেখানে দলীয়করণ করা হয়েছে।’
গার্মেন্টসসহ শিল্পকারাখানায় সরকারের জেলাওয়ারি একটি পরিসংখ্যান তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘গার্মেন্টসসহ শিল্পকারখানায় করোনা পজিটিভ সংক্রমণ রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ১০৯ জন আর মারা গেছেন ১৯৪ জন।’
সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বড় সমস্যা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। এটা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েছে। আপনি খবরের কাগজে দেখেছেন কতগুলো ছবি যে, টেস্ট করতে গিয়ে তিন ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে তিনি ওখানে পড়ে মারা গেছেন। এটা মর্মান্তিক। আমাদের মতো সভ্য দেশে এরকম স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দেখতে হবে আমরা ভাবতে পারি না।’
এই সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার ও শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস