করোনায় লিচুর রাজারে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতির আশঙ্কা

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৫-০৫ ২০:০৭:৪৯


করোনার প্রভাবে দেশের আভ্যন্তরীণ জেলা থেকে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়া আসতে না পারায় লিচু বিক্রি ও বাজারজাত নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার লিচুবাগান ও আড়দার মালিক সমিতি। বাজারজাত ব্যবস্থার সুযোগ সৃষ্টি না হলে ৫০ কোটি টাকার লোকসান গুনতে হবে লিচু চাষিদের।

লিচুর রাজ্যখ্যাত উপজেলার নাজিরপুর ইউনিয়নের কানু মোল্লার বটতলায় অবস্থিত লিচুর আড়তে মঙ্গলবার সকালে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে এমন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কথা জানান লিচুচাষি ও আড়তদার মালিক সমিতি।

লিচু চাষি ও আড়তদার মালিক সমিতির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লিচু আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম। তিনি দাবি করেন, উপজেলার মধ্যে নাজিরপুর ইউনিয়নজুড়ে বাণিজ্যিকভাবে লিচুর আবাদ বেশি। তাছাড়া পাশের সিংড়া ও বড়াইগ্রাম উপজেলাতে লিচুর আবাদ হয়। ভৌগলিক কারণে এই আড়তের মাধ্যমে ট্রাকে করে লিচু ছড়িয়ে পড়ে দেশ্যব্যাপী। অনেকে আবার বাগান থেকেও লিচু কিনে ট্রাকে করে নিয়ে যান।
কিন্তু এবছর করোনার প্রভাবের কারণে দেশের আভ্যন্তরীণ জেলা থেকে মহাজন, ব্যাপারী ও ফড়িয়ার আসতে না পারায় বাগানের লিচু বিক্রি হয়নি। জমে উঠেনি লিচুর আড়তও। একারণে লিচুর বাজারজাত ও ন্যায্যমূল্য পাওয়া নিয়েও শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন লিচুচাষি ও আড়তদাররা।
আড়তদার সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান জানান, ভরা মৌসুমে প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২০ ট্রাক করে লিচু ছড়িয়ে পড়ে দেশ্যব্যাপী। প্রতি ট্রাকে গড়ে ৪-৫ লাখ টাকার লিচু থাকে। সে হিসেবে তিন সপ্তাহের মৌসুমে গড়ে ৮০ কোটি টাকার লিচু বেচাবিক্রি হয়ে থাকে। কিন্তু এবছর ক্রেতার অভাবে লিচু ব্যবসায় ধস নামার শঙ্কা দেখছেন লিচু সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে প্রায় ৮ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।

সাংবাদিক সম্মেলন সভাপতিত্ব করেন আড়তদার মালিক সমিতির পক্ষে শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হক। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিতি ছিলেন মো. মোত্তালেব সরদার মো. আশরাফুল ইসলাম তালুকদার ও মো. আসাদুজ্জামান প্রমূখ।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম জানান, উপজেলা ৪১০ হেক্টর জমিতে লিচুর আবাদ হচ্ছে। এখান থেকে ৩ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন লিচুর উৎপাদন হবে। যা বাজার মূল্য ৫০ কোটি টাকারও বেশি।

কৃষি কর্মকর্তা আরো জানান, গত বছর তাপমাত্রায় লিচুর চামড়া পুড়ে নষ্ট হলেও এবছর অনুকূল আবহাওয়ায় লিচুর আকার আকৃতি বড় হয়েছে। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ব্যাপারী, পাইকার ও ফড়িয়া আসতে না পারা এবং বাজারজাত সমস্যার কারণে লিচু চাষিদের কপাল পুড়তে পারে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস