ইউএনও রক্ত দিয়ে বৃদ্ধার জীবন বাঁচালেন
সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৫-১৩ ১৫:১৮:০৮
রোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে ‘বিশ্ব মা দিবসে’ এক বৃদ্ধ মাকে রক্ত দিয়ে অনুকরণীয় নজির স্থাপন করলেন ময়মনসিংহ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শেখ হাফিজুর রহমান সজল।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ময়মনসিংহ জিলাস্কুল রোডের মরহুম আলিম উদ্দিনের ছেলে মঈন উদ্দিন জুনুর মা সৈয়দা জামিমা আক্তার (৮০) ছয় বছর ধরে কিডনি রোগে ভুগছেন। চিকিৎসক হঠাৎ পরামর্শ দেন জামিমা আক্তারের ডায়ালাইসিস করতে হবে এবং তার জন্য জরুরি ভিত্তিতে রক্ত লাগবে। রক্তের ও-পজিটিভ ।
১০ মে বিশ্ব মা দিবসে দুপুরের দিকে সমাজকর্মী আলী ইউসুফকে রক্তের প্রয়োজনের খবর মুঠোফোনে জানান মঈন। আলী ইউসুফ তখন ইউএনও অফিসেই ছিলেন। বিষয়টি জেনে ইউএনও সজল জানান, করোনার ঝুঁকির মধ্যে যদি অন্য কোথাও দাতা যোগার করা যায় তাহলে তিনি রক্ত দিতে রাজি আছেন।
তিনি আলী ইউসুফকে বলেন, ‘আজ বিশ্ব মা দিবস। এই দিনে একজন মায়ের জীবন বাঁচাতে রক্ত দিতে পারাটা এক বিরল সৌভাগ্যের বিষয় হবে।’
আলী ইউসুফ জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব, রমজান মাস এবং স্বল্প সময়ের কারণে কোথাও দাতা খুঁজে না পেলে তিনি বিষয়টি ইউএনওকে জানান। গতকাল সোমবার দুপুরেই রক্ত প্রয়োজন, ফোনে এই খবর শুনেই ইউএনও বলন, ‘ঠিক আছে ব্যবস্থা করুন, আমি দুপুরেই রক্ত দিব।’
দুপুরে ইউএনও তার অফিসে রোজা রাখা অবস্থাতেই রক্তদান করেন। এরপর বৃদ্ধ মায়ের ডায়ালাইসিস সম্পন্ন হয় এবং বর্তমানে তিনি সুস্থ আছেন।
এ ঘটনা জেনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক সভাপতি ফেরদৌস আরা মাহমুদা হেলেন বলেন, ‘একজন অসুস্থ মায়ের জন্য বাংলাদেশ সরকারের একজন সরকারি কর্মকর্তার বিরল ভালোবাসার অনন্য নজির ও সাক্ষী হয়ে থাকবে এই রক্তদানের ঘটনা।’
ইউএনও সজল জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে প্রথম বর্ষে থাকাকালীন ২০০১ সালে সাভারে ধর্ষণের শিকার এক শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রথম রক্ত দান করেন তিনি। চাকরি জীবনে নানা কর্ম-ব্যস্ততার মধ্যেও এ পর্যন্ত ২৫ বার রক্ত দিয়েছেন তিনি।
ময়মনসিংহের বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘সজল একজন বৃদ্ধ মায়ের জীবন বাঁচাতে রক্ত দিয়ে যে মহানুভবতার পরিচয় দিয়েছেন, এজন্য আমরা গর্বিত। প্রশাসনিক পর্যায়ে তার এই মহতী কাজ অনন্য উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
সানবিডি/এসকেএস