‘ফ্রুটফূল ডিসকাসন, শিগগিরই খুলছে ফেসবুক’

আপডেট: ২০১৫-১২-০৭ ০৯:৩৯:০১


facebook1ফেসবুক কতৃপক্ষের সাথে বৈঠকের বিষয়বস্তু প্রকাশ না করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘কি আলোচনা হয়েছে সেগুলো শুধু আমাদের মধ্যেই রাখব। শুধু এটুকু বলব আমাদের মধ্যে ফ্রুটফুল ডিসকাশন (ফলপ্রসূ আলোচনা) হয়েছে। আমাদের চিন্তা-ভাবনার আরো কিছু বিষয় রয়েছে। আমরা শিগগিরই এটার (ফেসবুক খুলে দেওয়ার) সিদ্ধান্ত নেব।’

পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কর্মকর্তাদের সঙ্গে রবিবার বৈঠকের পর মন্ত্রী এ কথা জানান। সকাল সাড়ে ১০টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বৈঠকে বসেন আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

দু’ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বৈঠক শেষ হয়। ফেসবুকের পক্ষে বৈঠকে ছিলেন দক্ষিণ এশিয়ার পাবলিক পলিসি ম্যানেজার দিপালী লিবারহেন ও দক্ষিণাঞ্চলের বিশেষজ্ঞ বিক্রম লাংয়ে।

বৈঠক শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আমাদের সিকিউরিটির ক্ষেত্রে কি প্রয়োজন সেটা (ফেসবুক কর্মকর্তাদের) বলতে সক্ষম হয়েছি। যারা এসেছেন তারাও আমাদের কথাগুলো শুনেছেন। তারা কতটুকু সহযোগিতা করতে পারবেন সে বিষয়েও তাদের তরফ থেকে জানানো হয়েছে। আমরা এগুলো পর্যালোচনা করে একটা সিদ্ধান্ত খুব শিগগিরিই জানাচ্ছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীর যেসব প্রশ্ন ছিল, সেগুলোর সবই ডিসকাশন হয়েছে। দু’জন প্রতিমন্ত্রীও কথা বলেছেন।’

বিকল্প উপায়ে তো ফেসবুক ব্যবহার করছেন। এটা আপনারা কিভাবে বন্ধ করবেন- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যুব সমাজ অত্যন্ত প্রতিভাবান। প্রধানমন্ত্রীর আশা-ভারসা অনেকখানি এ যুব সমাজের ট্যালেন্টের উপর। সেজন্য আমরা মনে করি যুব সমাজ বিভিন্ন কায়দায় ফেসবুক খুলছেন কিংবা ব্যবহার করছেন। সেগুলো অন্য ব্যাপার। কিন্তু যে ডিসকাশন হয়েছে তার ভিত্তিতে অফিসিয়ালি আমরা শিঘ্রই ফেসবুক খোলার সিদ্ধান্ত দিচ্ছি।’

ফেসবুকের কাছে সরকার কী চেয়েছে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ‘অনেকে ফেসবুক অপব্যবহার করছে। আমাদের অনেক প্রপাগান্ডাও ফেসবুকের মাধ্যমে আসছে। জাতীয় নিরাপত্তার কিছু প্রশ্ন ছিল সেগুলো নিয়ে আমরা কথা বলেছি।’

ফেসবুকের কন্টেন্ট সরকার ফিল্টার (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারবে কিনা- সংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব কথা হয়েছে। আমি তো বলেছি আমাদের সঙ্গে সব ধরণের কথা হয়েছে। ফিল্টার করা, কতখানি চলবে, সবকিছু নিয়ে কথা হয়েছে।’

facebook2মানবতাবিরোধী অপরাধে দোষী সাব্যস্ত দুই জামায়াত নেতার ফাঁসির রায় কার্যকর করাকে সামনে রেখে গত ১৮ নভেম্বর ফেসবুক বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ সরকার। বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ফেসবুকে প্রকাশিত কোনো বিষয় নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা সরকারের নেই।

এ প্রেক্ষাপটে গত ৩০ নভেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী ফেসবুক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ জানিয়ে মেইল করেন। এর একদিন পরেই মেইলের সাড়া দেয় ফেসবুক। তারা ফিরতি ই-মেইলে বাংলাদেশে এসে সরকারের সঙ্গে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করে। এ পরিপ্রেক্ষিতেই রবিবারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হল।

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোজাম্মেল হক খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) একেএম শহীদুল হক, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি) সহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।