ন্যাকামি করে হলেও কাঁদুন, চোখ বাঁচান
প্রকাশ: ২০১৫-১২-০৯ ১১:০৭:১৯
একসময় শোনা যেত, সারাদিন পড়ে পড়ে চোখের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে। এখন শোনা যায়, সারাদিন ফেসবুক ঘেঁটে ঘেঁটে চোখের বারোটা বাজার খবর। কিন্তু যেভাবেই বারোটা বাজুক, চোখ কিন্তু আপনারই যাচ্ছে। মানুষের জীবনযাত্রা বদলেছে। দৃষ্টিনিবদ্ধ হয়ে একনাগাড়ে কাজ করে গেলে আপনার চোখ ‘ড্রাই’ হয়ে যায়। ফলে একসময় দৃষ্টিহীনও হয়ে যেতে পারেন। তাই ন্যাকামি করে হলেও একটু কাঁদুন। চোখ ভেজান।
শরীরের যত্ন নিতে অনেক কিছু করেন। রোজ ভালো খাওয়া, জিমে যাওয়া, নানা প্রসাধনিতে শুষ্ক ত্বকের সমস্যা দূর করা ইত্যাদি ইত্যাদি। কিন্তু দেহের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ চোখের জন্য কিছু করেন কি?
কীভাবে চাপ পড়ে চোখের ওপর? প্রথম কারণ আমাদের কাজের পদ্ধতি। এখন বেশির ভাগ মানুষই কম্পিউটারে কাজ করেন। ছোট থেকেই এখন বাচ্চারাও কম্পিউটারে কাজ করা অভ্যাসে পরিণত করে ফেলে। দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার ফলে চোখের পলক পড়ার হার অনেকটা কমে যায়।
আর বড় কারণ অবশ্যই মোবাইল ফোন। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং থেকে গেম সব কিছুতেই অপলক তাকিয়ে থাকার অভ্যাস তৈরি হচ্ছে আমাদের। সারাদিন এসব ঘাঁটাঘাঁটি চোখের বারোটা বাজাতে খুবই আন্তরিক!
আরেকটি কারণ কনট্যাক্ট লেন্সের ব্যবহার। অনেকে লেন্স লাগানোর পর তা খুলে রাখেন না। একটানা কয়েকদিন ব্যবহারও করেন। এটাও ভীষণ ক্ষতির কারণ। এর ফলে চোখ ভীষণভাবে শুকনো হয়ে যায়। যদি চিকিত্সকের পরামর্শ না নেওয়া হয়, তবে দৃষ্টিশক্তি পর্যন্ত হারাতে হতে পারে।
এই সমস্যাকে ডাক্তারি ভাষায় ‘ড্রাই আই’ বলা হয়। এতে চোখের লুব্রিকেশন ক্ষমতা কমে যায়। ফলে অচিরেই চোখের উপরিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হতে শুরু করে। চোখ চুলকানো, কটকট করা, মাথা যন্ত্রণা কিংবা ঘাড়ে ব্যাথার টানা সমস্যা যদি দীর্ঘদিন ধরে থাকে, তবে দেরি না করে চিকিত্সকের পরামর্শ নেয়া খুব জরুরি।
ড্রাই আইয়ের ক্ষেত্রে খুব কার্যকরি ‘আর্টিফিশিয়াল টিয়ার্স’ বা ন্যাকা কান্না। ঢং করে হলেও মনে একটু বিরহ ভাব আনুন। ব্যথিত অতীতকে সুখের বর্তমানে কান ধরে টেনে আনুন। তারপর গান গাইতে থাকুন : ক্যানে পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু, ছাড়ি যাইবা যদি… চোখ তো ভেজা চাই! এই কৃত্রিম কান্নাও আপনার চোখকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দেবে।
চোখের যেকোনো সমস্যায় দ্রুতই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। বাজারে আর্টিফিসিয়াল টিয়ার্স ড্রপ পাওয়া যায়। তবে সাবধান, ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন নিয়ে ওষুধ ব্যবহার করুন। না হলে চোখপটাং!