বন্যায় বগুড়ার পাট চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি

জেলা প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২০-০৮-১৭ ১৪:০৮:১৫


এবারের বন্যায় পূর্ব বগুড়ার পাট চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। দীর্ঘদিন জমিতে পানি জমে থাকায় পাট গাছ নষ্ট হয়ে গেছে। যারা বন্যার পানির মধ্যে পাট কেটে জাগ দিয়ে আঁশ বের করেছেন তারাও বাজারে ভালো দাম পাচ্ছেন না।

মূলত বগুড়া জেলার সব উপজেলাতেই কম-বেশি পাট চাষ করা হয়। তবে পূর্ব বগুড়ার গাবতলী, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনট এবং শেরপুর উপজেলার কিছু অংশে বেশি করে পাট চাষ করা হয়।

কিন্তু গত জুলাই এবং আগস্ট মাসে জেলায় দুই দফা বন্যা হয়েছে। এতে জেলার ৫টি উপজেলার বেশির ভাগ পাটের জমিতে বন্যার পানি প্রবেশ করে। বিশেষ করে সোনাতলা, সারিয়াকান্দি ও ধুনট উপজেলার যমুনার চরাঞ্চলে চাষ করা পাটের জমি বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এ বছর বগুড়া জেলায় ১৩ হাজার ৬১৯ হেক্টর জমিতে পাট চাষ করা হয়। পাট চাষে কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় প্রতি বছরই কৃষি বিভাগের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এ বছর কৃষি বিভাগ ১৩ হাজার ৪১৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২০৪ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ করা হয়। কিন্তু দুই দফার বন্যায় পাট চাষিদের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ বছর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৭ হাজার ৪৫৬ মেট্রিক টন।

চাষিরা জানান, বন্যায় পাটের জমিতে দীর্ঘদিন পানি আটকে ছিল। এতে পাটের আঁশের মান খারাপ হয়ে গেছে। তাই বাজারে দাম পাওয়া যাচ্ছে না।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বাজারে নতুন পাটের মণ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৩০০ টাকা পর্যন্ত। অথচ গত বছর সর্বনিম্ন দুই হাজার টাকা মণ দরে পাট বিক্রি করেছেন চাষিরা।

সারিয়াকান্দি উপজেলার চরবাটিয়া গ্রামের কৃষক জুয়েল হোসেন জানান, এবার চরের ২০ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছিলেন তিনি। বন্যার পানি দীর্ঘ দিন আটকে থাকায় তার ৫ বিঘা জমির পাট নষ্ট হয়ে গেছে।

ছোট কুতুবপুর গ্রামের কৃষক মোহাম্মদ সরকার জানান, তিন বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন তিনি। এর মধ্যে দুই বিঘা জমির পাট বন্যার পানিতে পচে নষ্ট হয়ে গেছে।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক শাহাদুজ্জামান জানান, চলতি মৌসুমে বন্যায় জেলার ৪ হাজার ৫৭৮ হেক্টর জমির পাট সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত ৫০ ভাগ জমির পাট কাটা হয়েছে। বন্যার কারণে জমি থেকে পাট কাটতে দেরি হচ্ছে।

সানবিডি/আরএম/