‘ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল’

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশ: ২০২০-০৮-১৭ ১৯:৩৪:০৫


ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় বিশ্বাস করতেন বলেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেছেন, গণপরিষদে সংবিধান পাস করার সময় বঙ্গবন্ধু স্পষ্টভাবে বলেছিলেন ধর্ম পবিত্র, একে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে দেয়া হবে না।

মন্ত্রী বলেন, ৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বক্তব্য এবং তার পরবর্তী সময়ে যে বাংলাদেশকে আমরা দেখেছি তা দেখে আমরা বুঝতে পারি বঙ্গবন্ধুর একমাত্র অপরাধ ছিল তিনি বাংলাদেশকে একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে পরিণত করতে চেয়ে ছিলেন। ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে অনেক অপপ্রচার চালানো হয়েছিল। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। ধর্ম নিরপেক্ষতা হলো বিভিন্ন ধর্মের মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্প্রীতি। আর এই জন্যই আজ আমরা বলতে পারি ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ধর্ম যার যার উৎসব সবার।

সোমবার (১৭ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস ২০২০ উপলক্ষে ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের আয়োজনে বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব একথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বলতেন সমাজতন্ত্র, প্রগতি ও সাম্প্রদায়িকতা পাশাপাশি চলতে পারে না। বঙ্গবন্ধু কোন নিদৃষ্ট ভূখন্ড বা নির্দিষ্ট ব্যক্তির সমাজতন্ত্রের অন্ধ অনুকরণ করতেন না। তিনি বাঙালি সংস্কৃতি ও সভ্যতা সাথে সম্পর্কিত সব রকমের শোষণ, বৈষম্য ও কুপমন্ডুকতাহীন একটি সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। এটাই ছিল তাঁর অপরাধ। তাকে হত্যা করে ষড়যন্ত্রকারীরা বাংলাদেশকে একটি ধর্মান্ধ রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল। কিন্তু আদর্শের মৃত্যু হয় না। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে হত্যা করা সম্ভব হয়নি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সারাবিশ্বে একটি উদার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিত। শত প্রতিকূলতার মধ্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শ আজ আমাদেরকে পথ দেখায়।

মন্ত্রী বলেন বঙ্গবন্ধু খন্ডিত সভ্যতা নয়, আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও সভ্যতার সমন্বয়ে গঠিত একটি বাঙালি জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করতে। আর এজন্যই তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।

ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য খন্দকার ইফতেখার হায়দারের সভাপতিত্বে এই সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে যুক্ত ছিলেন- বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক কবি ডঃ কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী।

কামাল আবদুল নাসের বলেন, উপমহাদেশে যত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ছিলেন সকল দাঙ্গার বিরুদ্ধে। পাকিস্তান রবীন্দ্রসঙ্গীত নিষিদ্ধ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু তার প্রতিবাদ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে বিশ্বাস করতেন। বঙ্গবন্ধু বলতেন আমরা হিন্দু বা মুসলিম যেমন সত্য, তার চেয়ে বড় সত্য হলো আমরা বাঙালি।

আরো বক্তব্য রাখেন- ইউজিসি প্রফেসর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির সদস্য ড. ফখরুল আলম, ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এ মতিন চৌধুরী প্রমূখ

ফখরুল আলম বলেন কলকাতা, বিহার ও নোয়াখালীর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ভয়াবহতা এবং ভাষা আন্দোলন বঙ্গবন্ধুকে ধর্মনিরপেক্ষ চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে।

সানবিডি/আরএম/