করোনায় ৬০ শতাংশ চা অবিক্রীত

সান বিডি ডেস্ক আপডেট: ২০২০-০৮-২০ ১৬:১১:০০


বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের সম্ভাব্য ক্ষতি এড়াতে ঝুঁকি নিয়ে চা বাগানগুলোতে উৎপাদন অব্যাহত রাখা হয়েছিল। এ মহামারির প্রভাব এড়াতে পারেনি দেশের চা-শিল্প। এই ভাইরাসের  কারণে কমে গেছে বেচাকেনা ও দাম। বিপাকে পড়েছেন বাগান মালিকরা। উৎপাদিত চা বিক্রি না হওয়া ও দাম না পাওয়ায় বাগান চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা।

চায়ের বাগান মালিকদের সংগঠন চা সংসদ জানিয়েছে, এবার সিলেট অঞ্চলের বাগানগুলোতে চা উৎপাদন গত বছরের তুলনায় প্রায় ৪০ শতাংশ কমেছে। আর উৎপাদিত চায়ের ৬০ শতাংশ থাকছে অবিক্রীত। দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চা বাগানগুলোতেও একই অবস্থা।

এ ব্যাপারে সংগঠনটি বলছে, দেশের বাজারে বছরে প্রায় ৯ কোটি কেজি চায়ের চাহিদা রয়েছে। এর বড় অংশ টং দোকান-হোটেল-রেস্টুরেন্টগুলোয় ব্যবহার হয়। গত মার্চ থেকে দীর্ঘদিন ধরে টং দোকান-হোটেল-রেস্টুরেন্ট বন্ধ ছিল। বর্তমানে সীমিত আকারে খুললেও ব্যবসা কমেছে। সামগ্রিকভাবে ব্যবহার ও বেচাকেনা কমে যাওয়ায় দেশে নিলামগুলোয় সরবরাহ করা বেশির ভাগ চা অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। ফলে কমছে দাম। শ্রীমঙ্গলের চা নিলাম কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর এখন পর্যন্ত এ কেন্দ্রে তিনটি নিলাম আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিটি নিলামে লক্ষাধিক কেজি চা সরবরাহ করা হলেও তিন নিলাম মিলিয়ে এক লাখ কেজির সামান্য বেশি চা বিক্রি হয়েছে। গত বছর প্রতি কেজি চা ২০০-২৩০ টাকায় বিক্রি হলেও এবার তা কেজিপ্রতি ১৬০-১৮০ টাকায় নেমে এসেছে। চট্টগ্রামের নিলাম কেন্দ্রেও চায়ের বেচাকেনা ও দামে একই অবস্থা বজায় রয়েছে। অবিক্রীত চায়ের মজুদ ক্রমেই বাড়ছে।

এ বিষয়ে ফিনলে টি কম্পানির মালিকানাধীন হবিগঞ্জের একটি চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘প্রতি নিলামে আমাদের কম্পানির ৩৫-৪০ শতাংশ চা অবিক্রীত থাকছে। এতে একদিকে যেমন নগদ টাকা আসছে না, অন্যদিকে গুদাম ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত টাকা গুনতে হচ্ছে। এ কারণে এ বছর চা বাগানের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণকাজ আটকে আছে। এভাবে চলতে থাকলে ছোট বাগানগুলো বড় সমস্যায় পড়বে। যথাসময়ে শ্রমিকদের বেতন পরিশোধ নিয়েও সমস্যা দেখা দিতে পারে।’

গোয়াইনঘাটের শ্রীপুর চা বাগানের ব্যবস্থাপক মনসুর আহমদ বলেন, ‘কম দামে চা বিক্রি করায় অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচও উঠছে না।’

সিলেট অঞ্চলের অন্তত আটজন বাগান ব্যবস্থাপক একই ধরনের কথা বলেন । তাঁদের প্রত্যেকের ওয়্যারহাউসে চায়ের মজুদ বেড়েছে। নষ্ট হচ্ছে চায়ের মান। আগামী দিনগুলোতে মজুদ করা এসব চা ভালো দামে বিক্রি না হওয়ার সম্ভাবনার কথাও জানান তাঁরা।

সানবিডি/এনজে