বন্যায় লেবুচাষীদের মাথায় হাত

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৮-২৫ ১৩:৫৬:৪৯


ঢাকার ধামরাই উপজেলার যাদবপুর ইউনিয়নের কুমারহাটি গ্রামের কৃষক আব্দুল লতিফ প্রায় চার বিঘা জমিতে লেবু চাষ করেছেন। তার এই জমি থেকে ‍উৎপন্ন হওয়া লেবু বিক্রি করেই পাঁচ সদস্যের সংসার চলছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক বন্যায় জমিতে পানি ঢুকে তার সব লেবু গাছ মরে গেছে।

কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, চার বিঘা জমিতে লেবু চাষ করতে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা। চারা রোপনের দুই বছর পর থেকেই লেবু ধরতে শুরু করেছিল। এ বছর করোনার কারণে দাম বেশি থাকায় দুই লাখ টাকার লেবু বিক্রিও করেছেন। আশা করেছিলেন আগামী তিন-চার বছর লেবু বিক্রি করবেন ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা। কিন্তু বন্যা তার সেই আশা আর স্বপ্ন পূরণ করতে দেয়নি।

শুধু আব্দুল লতিফেরই নয়, ধামরাইয়ের কুমারহাটি গ্রামের ফরিদ মোল্লার দুই বিঘা, মোস্তফার তিন বিঘা, ফিরোজ খানের চার বিঘা, গাঁওতারা গ্রামের নুরুল ইসলামের ৬ বিঘা, বিলকুশনাই গ্রামের লুৎফর রহমানের দুই বিঘা, বাইশাকান্দা গ্রামের আব্দুস সালামের তিন বিঘা, আবুল কালামের দুই বিঘা, আমরাইল গ্রামের দুলাল মিয়ার তিন বিঘা জমির লেবু গাছ বন্যার পানিতে মরে গেছে।

এ ব্যাপারে ধামরাই উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে লেবু চাষ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ৫১০ হেক্টর জমির লেবুর বাগানেই বন্যার পানি উঠেছে। ধামরাইয়ের যাদবপুর, বালিয়া, বাইশাকান্দা, কুশুরা, গাংগুটিয়া, চৌহাট, আমতা ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি লেবুর চাষ হয়। এসব ইউনিয়নের বাগানে পানি ওঠায় বাগান থেকে লেবু তোলা বিপজ্জনক হয়ে উঠে। লেবুর ফলন ভালো হলেও বন্যার পানিতে পঁচে গেছে বেশিরভাগ বাগানের লেবু। পানি কমতে থাকায় লেবু গাছগুলোও মরতে শুরু করেছে। লাখ লাখ টাকা খরচ করার পর লেবু গাছ রোপন করার দুই থেকে তিন বছর পর ওই গাছে ফল আসে। এ বন্যায় ধামরাইয়ের প্রায় দুই হাজার লেবুচাষী প্রায় ৫ কোটি টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।

ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান বলেন,বিভিন্ন প্রকার লেবু চাষের জন্য ধামরাই উপজেলা বিখ্যাত। ধামরাইয়ের লেবু ঢাকাসহ বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। আর এই সাম্প্রতিক বন্যায় ধামরাইয়ের লেবুচাষীরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের জন্যে আলাদাভাবে এখনো কোন সহায়তার সুযোগ হয়নি। তবে সকল কৃষককেই যথাসাধ্য সহায়তার প্রচেষ্টা চলমান রয়েছে। লেবুচাষীদের ক্ষতি কিছুটা হলেও পুষিয়ে নিতে প্রতিনিয়ত তাদের বুদ্ধি-পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

সানবিডি/এনজে