নাটোরের সফল অনলাইন উদ্যোক্তা সুহামনি
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৮-২৯ ২৩:০৩:০১
এ বছরের এসএসসি পরীক্ষার্থী নাটোরের বড়াই গ্রামের তাহসিন বারি সুহা।যে বয়সের তরুণীরা সাধারণত একটু অবসর পেলেই সাজগোজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।উদ্যোক্তা কি জিনিস তাদের মাথায় ঢুকে না।সেক্ষেত্রে পুরোপুরি ব্যতিক্রম এই তরুনী।অনলাইন ব্যবসাকে যেন হাতের মুঠোই এনে পুরেছেন।
বিভিন্ন অনলাইন উদ্যোক্তাদের গ্রুপে পিচ্চি আপু, সুহামনি নামে পরিচিত। বাবা মাজেদুল বারি নয়ন, মা রত্না বানু। মৌখাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বাংলাদেশের অন্যতম কনিষ্ঠ উদ্যাক্তা হিসেবে ইতোমধ্যে পরিচিতি লাভ করেছে। শুরুতে মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়ে শুরু করে আজ তার বিনিয়োগ প্রায় ৫ লাখ। তার উদ্যোগের সঙ্গে যুক্ত মা-বাবা ছাড়া আরও ৪ জন। অর্থাৎ মাত্র ১৬ বছরে ৪ জন মানুষের কর্মসংস্থান করে দিয়েছেন সুহা।
তার উদ্যোক্ত জীবনের শুরুর কথা জানতে চাইলে তিনি সানবিডি প্রতিনিধিকে জানান, মহামারি করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ফলে যখন স্কুল প্রাইভেট সবকিছু বন্ধ হয়ে যায় তখন বাসায় অনেক বোরিং সময় কাটছিল। সারাক্ষণ ভিডিও গেম, মুভি দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। আম্মু খুব রেগে যেত। তারপর আম্মু আমাকে উই গ্রুপে জয়েন করিয়ে দেয়। সবার পোস্ট কমেন্ট পড়তে থাকি কিছুদিন। খুব ভালো লাগে আমার। সব আপুদের দেখে নিজেরও কিছু করতে ইচ্ছে হয়। সবার দেখা দেখি একদিন আমিও পোস্ট দিই কলা নিয়ে। আমি অবাক হয়ে যাই। আমার প্রথম পোস্টেই অর্ডার আসে।
তিনি আরো বলেন, আমার প্রথম কাস্টমার ছিলেন নাহিদ সালমা কচি আন্টি। কলার সাথে সাথে আন্টি নারিকেলি কচু, সরিষার তেল, পেয়ারাও অর্ডার করেন। খুব এক্সাইটেড ছিলাম। তখন হোম ডেলিভারির ব্যবস্থাও ছিলো না। পাঠিয়েছিলাম এসএ পরিবহনে। কাঁচামাল ঠিক সময়ে পৌঁছাবে কি না, এটা নিয়ে টেনশনে ছিলাম খুব। যখন ফাইনালি জানলাম ঠিকমত পৌঁছেছে এবং আন্টির সব কিছু পছন্দ হয়েছে তখন অন্য রকম আনন্দ হচ্ছিল।
তিনি জানান,ছোট বেলায় আমার দাদু আমাকে একটা গরুর বাছুর উপহার দিয়েছিলেন। সেটা বড় হয়ে বাছুর দিলে বিক্রি করে দেয়া হয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকায়। টাকাটা জমা ছিল আম্মুর কাছে। আমি প্রথমে আমার আম্মুর কাছে ২,০০০ টাকা ধার নিয়ে স্টার্ট করেছিলাম। পরে অবশ্য আস্তে আস্তে পুরো টাকাটাই নিয়ে আমার বিজনেসের কাজে লাগিয়েছি।
তিনি বলেন,করোনার সময় ব্যবসা শুরু করেছিলাম। যে কারণে পড়াশোনার চাপটা একটু কম ছিল। কিন্তু সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা। যে কারণে পড়াশোনার চাপটা এখন বেশি। আমি ৩ জন কর্মী নিয়োগ করেছি। যারা আমাকে অনেক হেল্প করে। আমার ম্যানেজার আঙ্কেল টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করা। উনি আমার সব হিসাব-নিকাশ রাখেন। পেজেও মডারেটরের দায়িত্ব পালন করেন। এজন্য চাপটা একটু কমেছে। আর আমার কর্মীরা কাজ করে, আমি নির্দেশনা দিই, পাশাপাশি পড়াশোনাও করি। একটু চিন্তা-ভাবনা করে টাইম ম্যানেজমেন্ট করলে ততটা কঠিন হয় না। দেখা যাচ্ছে আমার কর্মীরা প্যাকিং করছে, আমি পাশে বসে পড়ছি। সারাদিনটাকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করে নিয়েছি। একটা রুটিনের মধ্যে ফেলেছি। সেভাবেই কাজ করছি।
সুহার একজন অনলাইন কাস্টমারের রিভিউ:
Sifat Ferdous Chaity
রিভিউ টাইম :
দুপুরে খেতে বসছি হটাৎ ফোন আন্নোন নাম্বার থেকে। রিসিভ করলাম, বললো ফলের ঝুড়ি থেকে আপনার প্রোডাক্ট আসছে। আমি তো অবাক। পরশু দিন অর্ডার করছি নাটোরে আর আজকেই চলে আসছে !! মানে আমি ঢাকায় বসেও ২ দিন এ ডেলিভারি দিতে পারি না মাঝে মাঝে আর সেখানে নাটোর থেকে চলে আসছে ১ দিনেই। পঁচা মেয়ে আমাকে আগে একটু ইনফর্ম করলে আমি কিছু জিনিস কিনে রাখতাম না। ভাবছি নাটোর থেকে আসতে তো অনেক লেট হবে তাই। tahsin Bari Suha এর ফলের ঝুড়ি তে অর্ডার করেছিলাম,
দেশী মিষ্টি মালটা
শব্রি কলা
কচু শাক
বুটের ডাল
আমড়া
পেয়ারা
লাল গমের আটা
লেবু
হলুদ গুড়া
আর প্যাকেজিং এর কথা কি বলবো।বিশ্বাস করেন সব এত ফ্রেশ। আমি সত্যি পার্সেল পেয়ে খুব খুশি হইছি। অর্গানিক খাবার আমার খুব পছন্দ তাই ফলের ঝুড়ি তে অর্ডার দেয়া। এখন থেকে ইনশাআল্লাহ রেগুলার নিবো। ধন্যবাদ ছোট্ট আপু। তোমার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা আর ভালোবাসা।
সত্ত্বাধিকারী
Fusion by Chaity
&
শরৎ
সানবিডি/জামান