কর্মজীবী নারীরা এখন র্আথ সামাজিক উন্নয়নের অংশীদার

প্রকাশ: ২০১৫-১২-১৩ ১৯:৪৪:৫৩


Nari
নমুনা ছবি

রাজশাহীর বরেন্দ্র উন্নয়ন প্রচেষ্টার সহায়তায় গঠিত রাজশাহী জেলার পবা থানার দামকুড়া ইউনিয়নের আলোকছত্র গ্রামের কৃষি শ্রমিক কর্মজীবী নারী সংগঠন। এই কৃষি শ্রমিক কর্মজীবী নারী সংগঠনটি ২০০৮ সালে ২৫ জন সদস্য নিয়ে পথ চলা শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারী শ্রমিকদের নিয়ে।

রাজশাহীর পবা থানার অন্তর্গত আলোকছত্র গ্রামে কথা হয়, সংগঠনটির সভাপতি, সহ-সভাপতি ও কোষাধক্ষ্যের সাথে।

সংগঠনের সভাপতি মোছা. ফাতেমা বেগম বলেন,আমরা কর্মজীবী নারীরা এই সংগঠনের সকল সদস্য গ্রামে বিভিন্ন ধরনের কৃষিকাজ করে থাকি। যেমন, মরিচ তোলা,পেয়াজ কাটা,কালাই তোলা মশুরি তোলা এছাড়া কচু বাছা কাজ করে থাকি।

সভাপতি অভিযোগ করে বলেন, আগে নারী পুরুষের সমান মজুরি ছিলনা মহিলাদের কাজে নিতে চায় না তবে যারা বুঝে নারী শ্রমিকরা বেশি কাজ করে তারা তাদেরকে নেয়। এছাড়া তিনি আরও বলেন মাঠে নারীদের কাজের ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা প্রসাব-পায়খানার জন্য কোনো সুব্যবস্থা থাকেনা। এছাড়া খাবার পানি ও পয়নিষ্কাশন সম্পূর্ণ করার জন্য পর্যাপ্ত পানির অভাব রয়েছে।

যেহেতু আমাদের নিজেদের বসতভিটা ছাড়া জমি জায়গা নেই । তাই আমরা চাষ করতে পারিনা, সাথে কর্মজীবী নারীরা মাঠে কাজ না থাকলে অলস সময় কাটায়। এমনকি এ নারীদের সারা বছর কাজ করার সুযোগও থাকেনা।

তবে এই কর্মজীবী নারী সভাপতি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, সংগঠনটির সাথে যুক্ত হওয়ার পর থেকে আমরা কর্মজীবী নারীরা মাঠে কাজ করার সুযোগ পায়। সাথে সাথে এখন সমান মজুরিও পায়। এখন পরিবারে উপার্জনকৃত অর্থ দিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা শেখাতে পারে। আবার স্বামী-স্ত্রী দু জন মিলে পারিবারিক উন্নয়নে এক সাথে কাজ করি।

যেহেতু আমাদের নিজস্ব চাষাবাদের জমি ছিলনা কিন্তু এখন আমরা স্বামীর পরিচয়ে জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ করি এর সাথে সাথে স্বামী সহ পরিবারের ছেলে মেয়েরা ফসল ফলাতে সাহায্য করে। সে ফসল বাজারে ন্যায্য দামে বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করি।

আমার এক ছেলে রাজশাহী কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাসে অনার্স পাস করেছে। আমার ছোট মেয়ে পড়াশুনা করছে। সবই সম্ভব স্বামী-স্ত্রী দু জনের পারস্পারিক সহযোগিতায়। এ সংগঠনের সভাপতি বলেন আমরা যারা কর্মজীবী নারী শ্রমিক আছি।তাদের সবার সম্মতিতে সঞ্চয় গঠনের লক্ষে কর্মজীবী মহিলা উন্নয়ন সমিতি গঠন করি। এই সমিতিতে প্রত্যেক সপ্তাহে সকল সদস্য একদিন মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে নির্ধারিত দশ টাকা চাঁদা আদায় করা হয়। এই সমিতির চাঁদা রাখার জন্য একজন দায়িত্ব প্রাপ্ত কোষাধাক্ষ্য আছেন। এই সংগঠন হতে সংগৃহিত টাকা আশা এনজিওতে জমা রাখা হয়।তবে আমরা সভাপতির নামে ব্যাংক একাউন্ট খোলার চেষ্টা করছি।যাতে করে আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয় ।আমরা ভেবেছি এ সংগৃহিত টাকা থেকে আমাদের সদস্যদের বিপদ-আপদে সাহায্য সহযোগিতা করা হবে।
এই সংগঠনের অপর এক সদস্য রুমানা বলেন, মাঠে কাজ করি, কাথা সেলাই করি আর বাড়ির আঙিনায় সবজির চাষ করি ।সত্যি কথা বলতে ,এই সংগঠনের কারণেই এখন সামাজিক উন্নয়নমুলক র্কমকান্ডে অংশগ্রহণ করতে পারি । পরিবারের উন্নয়নে স্বামী স্ত্রী দুজন মিলে কাজ করি ।
সংগঠনটির সভাপতি তাদের বিভিন্ন র্কমকান্ডের কথা বলেন যে ,তারা বিভিন্ন দিবসে মানববন্ধন ও র‌্যালি করে । বাল্য বিবাহ প্রতিরোধে প্রচারণা চালায় ।সাথে ইউনিয়ন পরিষদের যেকোন সামাজিক উন্নয়ন র্কমকান্ডে সহযোগিতা করে ।

সানবিডি/ঢাকা