৯ হাজার কোটি টাকার কাজুবাদাম রপ্তানির স্বপ্ন
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-০২ ০৯:১৩:৫৫
প্রতিবছর ৯ হাজার কোটি টাকার কাজু বাদাম রপ্তানির সম্ভাবনা দেখছেন এই খাতের উদ্যোক্তারা। শুল্কবৈষম্য দূর করে ও শুল্ক ফাঁকি রোধ এবং নীতি সহায়তা পেলে আগামী চার বছরেই এই স্বপ্ন পূরণের ছক এঁকে ফেলেছেন তাঁরা। রপ্তানিতে এই বিশাল সম্ভাবনা দেখে মুগ্ধ হয়ে সরকারের কৃষি, অর্থ ও পরিকল্পনা এই তিন মন্ত্রণালয় একে বাস্তব রূপ দিতে পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। সরকারের ওই যৌথ উদ্যোগে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন উদ্যোক্তারাও।
সরকারের ওই তিন মন্ত্রীর কাছে এমন সম্ভাবনা তুলে ধরেছেন কাজুবাদামে প্রথম ও সফল উদ্যোক্তা শাকিল আহমেদ তানভীর। তিনি বলেন, ‘২০২৪ সালের মধ্যে বিলিয়ন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আমাদের বছরে চার লাখ ৪৪ হাজার টন কাজুবাদাম প্রয়োজন হবে। এই মুহূর্তে দেশে উৎপাদিত হচ্ছে বছরে দেড় হাজার টন। রাতারাতি তো আর দেশের উৎপাদন বাড়ানো যাবে না। উৎপাদন না বাড়া পর্যন্ত বাকি কাজুবাদাম কাঁচা আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হবে। এরপর দেশের কারখানায় প্রক্রিয়াজাত করে সেটি আমরা রপ্তানি করব।’
এ ব্যাপারে তিনি বলছেন, ‘কাঁচা কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্কবৈষম্য দূর করা, বাণিজ্যিক আমদানিতে শুল্ক ফাঁকি রোধ এবং রপ্তানিতে নীতি সহায়তা দিতে সরকারের তিন মন্ত্রণালয় যৌথভাবে অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। সেটি নিশ্চিত হলে ২০২৪ সালের মধ্যেই এক বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করতে পারব। আমরা দেশি উদ্যোক্তারাও সেভাবে প্রস্তুত হচ্ছি। শুধু তাই নয়, আমাদের স্বপ্ন ২০৩০ সালের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম কাজুবাদাম রপ্তানিকারক দেশ হওয়া।’
দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাছে কাজুবাদামের বড় উদাহরণ হচ্ছে ভিয়েতনাম। সারা বিশ্বে কাজুবাদামের বাজার ৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার; এর মধ্যে ভিয়েতনাম একাই চার বিলিয়ন ডলার রপ্তানি করে। কিন্তু সেই দেশে কাজুবাদাম উৎপাদন হয় পাঁচ লাখ টন; আরো ১৫ লাখ টন তারা আমদানি করে আনে। কাঁচা কাজুবাদাম আমদানির পর দেশে প্রক্রিয়াজাত এবং রপ্তানি করে ভিয়েতনাম বিশ্ববাজারে এখন শীর্ষে।
ভিয়েতনাম মডেলের উদাহরণ টেনে শাকিল আহমেদ বলেন, ‘কাঁচা কাজুবাদাম আমদানিতে শুল্কহার শূন্য করে দিয়ে দেশে প্রক্রিয়াজাত করে রপ্তানির মাধ্যমেই ভিয়েতনামের শুরু। ধীরে ধীরে তারা দেশে আবাদ বাড়িয়েছে এবং বাকিটা আমদানি করেই চাহিদা মেটাচ্ছে। আমরাও সেই পথে আগাতে চাই।’
উৎপাদন ও আমদানির তথ্য : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের হিসাবে, দেশে কাজুবাদাম ভোক্তার সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু আমদানির চিত্র বলছে, প্রতিবছরই বিপুল আমদানি হচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মাত্র ১৮ হাজার টন কাজুবাদাম আমদানি হয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সেটি বেড়ে এক লাফে এক লাখ ৩৩ হাজার টনে উন্নীত হয়। এরপর ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা আরো বেড়ে তিন লাখ ১৭ হাজার টনে উন্নীত হয়। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে আমদানি আরো বেড়ে চার লাখ ৪৫ হাজার টনে এবং ২০১৮-১৯ অর্থবছরে আমদানি বেড়ে পাঁচ লাখ ৮০ হাজার টনে উন্নীত হয়। আমদানি বাড়ার চিত্রই বলছে, ব্যবসাটা ভালো যাচ্ছে।