দেশে করোনা সংক্রমণ কমেছে : বেড়েছে সুস্থতা

:: প্রকাশ: ২০২০-০৯-০৯ ০৮:১৮:১১


দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার কমেছে এবং সুস্থতা বেড়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় ১৪ হাজার ৯৭৩ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১ হাজার ৮৯২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৩১০ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ৪১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ২০২ জন।

গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১২ দশমিক ৬৪ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ কম।

দেশে এ পর্যন্ত মোট ১৬ লাখ ৫৯ হাজার ৬৯৭ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ২৯ হাজার ২৫১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মোট পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ। গতকাল এই হার ছিল ১৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৩৬ জন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ২ লাখ ২৭ হাজার ৮০৯ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৯ দশমিক ১৯ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬৮ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার দশমিক ৫৯ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৩৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ১ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল মৃত্যুবরণ করেছেন ৩৭ জন। এখন পর্যন্ত দেশে এ ভাইরাসে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪ হাজার ৫৫২ জন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ। গত ৩ দিন ধরে মৃত্যুর একই হার বিদ্যমান রয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ১৪২ জনের। আগের দিন সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪৮৮ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৩৪৬টি নমুনা কম সংগ্রহ হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯৪টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৯৭৩ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪১২ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৩৪৬টি কম নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের মত জনসংখ্যার ভিত্তিতে প্রতি ১০ লাখে গত ২৪ ঘন্টায় ১১ দশমিক ১১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শনাক্ত ১৯৩৩ দশমিক ২৯ জন। সুস্থ হয়েছেন ২৪ ঘন্টায় প্রতি ১০ লাখে ১৯ জন, এ পর্যন্ত ১৩৩৭ দশমিক ৬৪ জন এবং ২৪ ঘন্টায় প্রতি ১০ লাখে মারা গেছেন দশমিক ২১ জন, এ পর্যন্ত মৃত্যু ২৬ দশমিক ৭৩ জন।
২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ১৯ জন পুরুষ এবং ১৭ জন নারী।তাদের মধ্যে হাসপাতালে ৩৫ জন এবং বাড়িতে ১ জন মারা গেছেন।এখন পর্যন্ত ৩ হাজার ৫৫৩ জন পুরুষ; ৭৮ দশমিক ০৫ শতাংশ এবং ৯৯৯ জন নারী; ২১ দশমিক ৯৫ শতাংশ মারা গেছেন।

২৪ ঘন্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, ষাটোর্ধ্ব ২২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৪ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ২ জন এবং ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ২ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা যায়, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা দশমিক ৪২ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৯ জন; যা দশমিক ৮৬ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১০৮ জন; যা ২ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৭৬ জন; যা ৬ দশমিক ০৬ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৯৭ জন; যা ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ২৩৭ জন; যা ২৭ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ২৭৬ জন; যা ৫০ শতাংশ।

বিভাগ বিশ্লেষণে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে ১৬, চট্টগ্রামে ৬, রাজশাহীতে ২, খুলনায় ৮, বরিশালে ২, সিলেটে ১ এবং রংপুরে ১ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ২ হাজার ২০০ জন; যা ৪৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯৭২ জন; যা ২১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ৩০১ জন; যা ৬ দশমিক ৬১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৮৬ জন; যা ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৭৭ জন; যা ৩ দশমিক ৮৯ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ২০৬ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ২১৩ জন; যা ৪ দশমিক ৬৮ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৭ জন; যা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ।

ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ২৪১টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ৭৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ১৬৬টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ১৮৯ জন ও শয্যা খালি আছে ১২১টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৭৮ জন ও শয্যা খালি আছে ৬০৪টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২০ জন ও শয্যা খালি আছে ১৯টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪২৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ২৮৩ জন ও শয্যা খালি আছে ৬ হাজার ১৪৩টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১০৩টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৪৫৯টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৫৩৬ জন এবং শয্যা খালি আছে ১০ হাজার ৯১৩টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩০৪ জন এবং খালি আছে ২৪৬টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১৩ হাজার ১১টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪৯০টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৩টি।

০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড় পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd এর CORONA কর্ণারে ‘করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ’ লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complainলিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।

গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হওয়া ৩ হাজার ২৩৬ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৭৮৭ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৫৬৮ জন, রংপুর বিভাগে ১৩৩ জন, খুলনা বিভাগে ৩৩৯ জন, বরিশাল বিভাগে ৫৪ জন, রাজশাহী বিভাগে ২৬৫ জন, সিলেট বিভাগে ৭৩ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১৭ জন রয়েছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় আইসোলেশনে রাখা হয়েছে ৩৬৩ জনকে। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ১৮ হাজার ৯০৭ জন। আইসোলেশন থেকে ২৪ ঘন্টায় ৬২৭ জন এবং এখন পর্যন্ত ৫৬ হাজার ২২৬ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশন করা হয়েছে ৭৫ হাজার ১৩৩ জনকে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও হোম কোয়ারেন্টিন মিলে ২৪ ঘন্টায় কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ১ হাজার ৬২৫ জনকে। কোয়ারেন্টিন থেকে গত ২৪ ঘন্টায় এক হাজার ৬৬৬ জন এবং এখন পর্যন্ত ৪ লাখ ৫৬ হাজার ৮৭৬ জন ছাড় পেয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোয়ারেন্টিন করা হয়েছে ৫ লাখ ৮ হাজার ৩৯৬ জনকে। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৮৫ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৩৮২টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪৩ হাজার ২৫৫টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯০টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫২ হাজার ৯২৭টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ২ কোটি ১ লাখ ৫৫ হাজার ১১১টি।

করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৭১৬ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ৩ লাখ ১৩ হাজার ১০৫ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তা দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৪ হাজার ২৮৫ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৯ লাখ ৫ হাজার ৪৪ জনকে স্কিনিং করা হয়েছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ লাখ ৮৭ হাজার ৯ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৪ হাজার ৫৪২ জন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৭০ লাখ ৩২ হাজার ৬১৭ জন এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ৮১ হাজার ৪৬৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।