হাঙ্গেরির সঙ্গে ‘জয়েন্ট ট্রেড কমিশন’ গঠনের সিদ্ধান্ত

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-১০ ১৭:২০:২৯


বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক জোনগুলোতে ফুড প্রসেসিং, বিশুদ্ধ ব্যবস্থাপনা, ফার্মাসিউটিক্যালস খাতে বিনিয়োগ করার প্রস্তাব দিয়েছে হাঙ্গেরি। আর সে লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যে একটি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠন হতে যাচ্ছে।

আজ বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে সফররত হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী পিটার সিজিজারটো ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির মধ্যে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জানা গেছে, আগামী একসপ্তাহের মধ্যে হাঙ্গেরি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠনের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব পাঠাবে।

এই বৈঠকে বলা হয়, গঠিত হতে যাওয়া জয়েন্ট ট্রেড কমিশনের মাধমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের খাতগুলো চিহ্নিত করা সহজ হবে। এগ্রো ফুড প্রসেসিং, বিশুদ্ধপানি ব্যবস্থাপনা এবং ফার্মাসিটিকেল খাতে হাঙ্গেরির বিনিয়োগকে বাংলাদেশ স্বাগত জানাবে। এছাড়া, আইসিটি, সেবাখাতে বিনিয়োগের প্রচুর সুযোগ রয়েছে।

এসময় বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘হাঙ্গেরির সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির প্রচুর সুযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ১০০টি স্পেশাল ইকোনমিক জোন গড়ে তোলার কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। ইতোমধ্যে জাপান, ভারত, চীন, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশ বড়ধরনের বিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছে। পরিবর্তনশীল বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতিতে আমেরিকা, জাপানসহ অনেক দেশ তাদের শিল্প-কলকারখানা বাংলাদেশে স্থাপনের আগ্রহ প্রকাশ করছে। দেশগুলো বাংলাদেশকে এখন বিনিয়োগের উপযুক্ত স্থান মনে করছে। বাংলাদেশ ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেষ্টমেন্ট(এফডিআই) এ ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আকর্ষণীয় সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে। প্রায় ১৭ কোটি মানুষের বাংলাদেশ পণ্যের একটি বড় বাজার। এখানে হাঙ্গেরি বিনিয়োগ করলে লাভবান হবে।’

এসময় হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হাঙ্গেরির ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে বাণিজ্য বৃদ্ধি করতে আগ্রহী। সেখানে এগ্রো ফুড প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রিসহ বাংলাদেশের বিশুদ্ধপানি ব্যবস্থাপনা ও ফার্মাসিটিকেল সেক্টরে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী।’ এজন্য একটি জয়েন্ট ট্রেড কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেন তারা।

হাঙ্গেরির বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিতে আধুনিক প্রযুক্তি ও মেশিনারিজ সরবরাহ করার সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধা আকর্ষণীয়, হাঙ্গেরি এসব সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে চায়। বৈদেশিক বাণিজ্য ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক সক্ষমতা অর্জন করেছে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় হাঙ্গেরি অংশীদার হতে চায়।’

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি হাঙ্গেরির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যমন্ত্রীকে আশ্বস্ত করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ দক্ষতার সাথে সফলভাবে কোভিড-১৯ মোকাবিলা করছে। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি খাত তৈরি পোশাক। এ সেক্টরে প্রায় ৪৮ লাখ শ্রমিক কাজ করেন। সরকার এ শিল্পকে সচল রাখতে আর্থিক প্রনোদনা দিয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা চালু রেখে রপ্তানি বাণিজ্য সচল রেখেছে। বাংলাদেশ কোভিড-১৯ প্রতিরোধকারী ফ্যাব্রিক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। বিভিন্ন দেশে এগুলোর চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া বাংলাদেশ বিশ্বমানের মেডিকেল পণ্য উৎপাদন করে প্রায় ১৪২টি দেশে রফতানি করছে।’

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে হাঙ্গেরিতে রফতানি করেছে ১১.৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। একই সময়ে আমদানি করেছে ১২.১২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরে বাংলাদেশ ১৮.৯৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য রফতানি করেছে এবং জুলাই-মার্চ সময়ে আমদানি করেছে ১১.৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য।

সানবিডি/এনজে