সামাজিক যোগাযোগে অসামাজিক কাজে আসছে কঠিন আইন
সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০২০-০৯-১৭ ১০:২৮:০৯
আইনের প্রক্রিয়ায় (ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও অন্যান্য) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসামাজিক গুজব প্রচার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপপ্রচার নিয়ন্ত্রণে আনার কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, এ ধরনের অপরাধ কমানো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে জবাবদিহিতার আওতায় আনা খুবই জরুরী। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশেই ওইসব সোশ্যাল মিডিয়ার আঞ্চলিক অফিস স্থাপনের বিধান রেখে কঠোর আইন করতে যাচ্ছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। শিগগিরই প্রস্তাবিত আইনটির খসড়া চূড়ান্ত করা হবে বলে জানা গেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, সোশ্যাল মিডিয়ায় রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন বিষয় ছড়ানো হয়। পাশাপাশি নানা ধরনের গুজব প্রচারও করা হয় অনেক সময়। এসব অপরাধ ঠেকাতে নতুন আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত আইনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রেখে দেশে সেগুলোর অফিস স্থাপনেরও বিধান রাখা হবে। ইতোমধ্যে সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, তুরস্ক এ ধরনের আইন করেছে। উন্নত বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে এই আইনের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সোশ্যাল মিডিয়া নিজ দেশে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন নতুন আইন করেছে বলে জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী। আমরাও বিটিআরসিকে বলেছি। আশা করছি আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে তারা খসড়া তৈরি করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের দায়িত্ব দিয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচার, গুজব রাষ্ট্রের জন্য বড় ধরনের হুমকি। নিজস্ব আইন না থাকায় আমরা অপরাধীর তথ্যও পাই না। প্রস্তাবিত নতুন আইনের এখনও নাম দেয়া হয়নি বলেও জানান মন্ত্রী।
মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে পুরো সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে আমরা কাজ করছি। আইনে ডেটা নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত তথ্য গোপনীয়তার ওপর জোর দেয়া হয়েছে। ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮’ প্রথম আইন, যেটা ডিজিটাল নিরাপত্তাকে অ্যাড্রেস করে। আমরা যে সময় এ আইনটি করি সে সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় এত অপরাধের ঘাঁটি ছিল না। এখন মনে করছি সোশ্যাল মিডিয়া আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ মাধ্যমে গুজব প্রচারসহ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। বিদেশী প্রতিষ্ঠান ও বিদেশ থেকে পরিচালিত হওয়ার কারণে সোশ্যাল মিডিয়ায় সংঘটিত অপরাধ দমনে আমাদের স্থানীয় আইন সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে পারি না।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, দেশে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে অপরাধপ্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। এ ধরনের সাইবার অপরাধের শিকার হচ্ছেন নারী। জঙ্গিরাও এই মাধ্যম ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ ও নানা হুমকি দিচ্ছে। জঙ্গিবাদ এবং ধর্মীয় উগ্রবাদ ছড়ানোর অভিযোগে সম্প্রতি ফেসবুকের ৩০টি পেজ ও আইডিকে চিহ্নিত করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিট।
এছাড়া ইউটিউবে অ্যাকাউন্ট খুলে নিয়মিত ভিডিও আপলোড দিয়ে অনেকেই অর্থ উপার্জন করেন। সুযোগ পেয়ে অনেকেই এর অপব্যবহারও করেছেন। অন্যের ভিডিও নিজের চ্যানেলে আপলোড করে দেয়া, অ্যাডাল্ট ভিডিও পোস্ট করা, ভিউ বাড়ানোর জন্য আপত্তিকর শিরোনাম কিংবা থাম্বনেইল এ অশ্লীল ছবি ব্যবহার করা ইত্যাদি।
এসকল বিষয় নিয়ে সরকারের শীর্ষ মহলের চিন্তার পর আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাতেও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়’। গত ৮ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সান বিডি/নাজমুল/১০:২৮/১৭.০৯.২০২০