ইজিবাইক চালকের ব্যাংক হিসাবে ১০ হাজার কোটি টাকা!
প্রকাশ: ২০১৬-০৪-০৬ ০৭:৪৩:০১
অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি। পটুয়াখালীর ইজিবাইক চালক সোহাগ ফকির হয়ে যেতে পারতেন হাজার কোটি টাকার মালিক। কিন্তু বিধিবাম! তার কোটিপতি হওয়া হলো না। লোহালিয়া নদী তীরের বাসিন্দা সোহাগ ফকির (২৭)। পেশায় ইজিবাইক চালক। শহরের জনতা ব্যাংক পুরান বাজার শাখায় তার একটি সঞ্চয়ী হিসাব রয়েছে, যার নম্বর ০১০০০১৮৭২০০০৫। সমপ্রতি ওই হিসাবে ব্যাংকের ভুলে পাঁচ ঘণ্টার জন্য জমা হয় ১০ হাজার ৪২ কোটি ২০ লাখ ৪২ হাজার ৭৬ টাকা। ওই কয়েক ঘণ্টার জন্য বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের কাতারে চলে যান সোহাগ। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের ভুল বুঝতে পেরে সেই টাকা সরিয়ে নেয়। বর্তমানে তার ব্যাংক হিসাবে আছে এক হাজার ১১ টাকা ৮৩ পয়সা। ঘটনাটি ঘটে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি। ব্যাংকের সফটওয়্যারের ভুলে তার হিসাবে হাজার কোটি টাকা যোগ হয়। টাকাগুলো আসে ওই ব্যাংকেরই অন্য এক শাখা থেকে। সোহাগ ফকির জানান, গত বছরের মাঝামাঝিতে তিনি জনতা ব্যাংক পটুয়াখালী শাখায় একটি সঞ্চয়ী হিসাব খোলেন। ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, ওই হিসাবে গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি জনতা ব্যাংকের সিরাজগঞ্জ বাঘাবাড়ি ঘাট শাখা থেকে অনলাইনে ১০০ টাকা জমার কাগজ আসে। কিন্তু বিকালে সেই টাকা পোস্টিং দিতে গিয়ে পটুয়াখালী শাখা রীতিমতো অবাক হয়। দেখা যায়, ওই হিসাবে ১০ হাজার ৪২ কোটি ২০ লাখ ৪২ হাজার ৭৬ টাকা জমা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে পটুয়াখালী শাখা থেকে বিষয়টি বাঘাবাড়ী ঘাট শাখায় জানানো হয়। জনতা ব্যাংকের পটুয়াখালী প্রধান শাখার ব্যবস্থাপক ফরিদ আহম্মদ জানান, সফটওয়্যারের ভুলের কারণে এ অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটেছে। ব্যালান্স যাচাইকালে বিষয়টি ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাস্থ আইটি প্রধান কার্যালয়ে বিষয়টি জানানো হয়। ওই দিনই বিকাল ৪টার দিকেই সংশোধনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জনতা ব্যাংক শাখার ম্যানেজার ফরিদ আহম্মদ জানান, এ ব্যাপারে সোহাগের কাছে জানতে চাওয়া হয়। সোহাগ জানান, এ ধরনের কোনো লেনদেন তিনি করেননি। তারপরও ব্যাংক হিসাবটির সব রকমের লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে। জনতা ব্যাংকের আইসিটি ডিপার্টমেন্টের দায়িত্বে থাকা উপমহাব্যবস্থাপক শেখ মো. জামিনুর রহমান বলেন, ‘এটা সাধারণ একটা ভুল। ব্যাংকের দৈনন্দিন কাজে এরকম ভুল হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যার মধ্যেই এ ধরনের ভুল সংশোধন করে প্রতিটি শাখার হিসাব মেলানো হয়। এখানে যে ঘটনাটি ঘটেছে তা আমাদের ইউজারের ত্রুটির কারণে হয়েছে। টাকার অংকটা অস্বাভাবিক ছিল। কিন্তু সন্ধ্যার মধ্যেই আমরা ভুলটা ধরতে পারি এবং সেটা সংশোধন করি। প্রসঙ্গত, প্রতিটি ব্যাংক শাখায় কর্মকর্তাদের কাজের সুবিধার্থে আলাদা আলাদা ইউজার আইডি দেয়া হয়। বাঘাবাড়ী ঘাট শাখার এক কর্মকর্তার ইউজার আইডি থেকে এ ধরনের ভুল এন্ট্রি করা হয়। মানবজমিন