যে কারণে ঘূর্ণিঝড়ের নাম রোয়ানু
প্রকাশ: ২০১৬-০৫-২২ ১১:৪০:৪৮
শনিবার বিকেলের মধ্যে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু। এরই মধ্যে ভোলায় এর প্রভাবে দুইজনের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া অসংখ্য গাছপালা ভেঙে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে যান চলাচল। বর্তমানে পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করে ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করছে ঘূর্ণিঝড়টি। ইতোমধ্যে চট্টগ্রামে ৭, কক্সবাজারে ৬, খুলনা ও মংলা সমুদ্রবন্দরে ৫ নম্বর বিপদ সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
তবে অনেকেই জানেন না কী কারণে ঘূর্ণিঝড়টির রোয়ানু? রোয়ানু শব্দটি মালদ্বীপের। এর অর্থ নারিকেলের ছোবড়ার তৈরি দড়ি। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ৮টি দেশের আবহাওয়া দফতর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলের তালিকা অনুযায়ী এ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়া হয়েছে রোয়ানু। মালদ্বীপ এ নামটি প্রস্তাব করেছিল।
ঘূর্ণিঝড়ের এই নামকরণ বিষয়টি নতুন নয়। প্রথম যে ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়েছিল, সেটা ছিল প্রায় তিনশ’ বছর আগে শ্রীলঙ্কার মহাপরাক্রমশালী রাজা মহাসেনের নামে। আর এ ব্যাপারে নাম প্রবর্তনকারী জাতিসংঘের এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের আবহাওয়া সংস্থা ‘এস্কেপ’। ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেয়ার কারণও বেশ সহজ। এগুলোর এমন নাম দেয়া হয় যেন বিজ্ঞানী থেকে সাধারণ মানুষ সহজে মনে রাখতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া অফিসগুলো এই নামকরণের দায়িত্ব পালন করে থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই দায়িত্ব পায় ভারতীয় আবহাওয়া সংস্থা। বাংলাদেশ, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, ওমান, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড থেকে আরব সাগর এবং বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড়ের নামকরণ করা হয়।
যখনই কোনো ঘূর্ণিঝড় হয়, এই দেশগুলো থেকে নাম প্রস্তাব করা হয়। এর আগেও ফলিন, হুদহুদ, নিলুফার নামেও নামকরণ করা হয়। ভারতের ছিলো অগ্নি, আকাশ, বিজলী, জাল লেহার, মেঘ। অনিল, অগ্নি, নিশা, গিরি এগুলো ছিলো বাংলাদেশের দেয়া নাম। ইতোমধ্যে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়ের নাম নির্ধারণ করা হয়েছে- এর মধ্যে মহাসেন আঘাত হেনেছে, এরপর আসবে ফাইলিন।
২০০৭ সালে বাংলাদেশে যে ঝড়টি আঘাত হানে, তার নাম ছিল সিডর অর্থাৎ চোখ। আর এই নামটি দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ২০০৮ সালে নার্গিস নামে যে ঘূর্ণিঝড়টি মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানে, সে নামটি দিয়েছে ভারত। ২০০৯ সালে ভয়ঙ্কর যে ঘূর্ণিঝড়টি প্রলয়তাণ্ডব ঘটায়, সেটা হলো আইলা (এর অর্থ হলো ডলফিন বা শুশুক)। আর আইলা নামকরণের কাজটি করেছেন মালদ্বীপের আবহাওয়াবিদরা।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস