জাবিতে হল প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ
জাবি প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২৩-১০-০২ ১৫:৪৯:১৯
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শহীদ সালাম-বরকত হলের অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে উদ্যোগ না নেয়া ও দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে হল প্রাধ্যক্ষ সুকল্যাণ কুমার কুন্ডুর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১১ টায় হলের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করে ওই হলের প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, হল সংলগ্ন রাস্তা সংস্কার, অকেজো ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও অভ্যন্তরীণ সমস্যা সমাধানে হল প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। এসময় শিক্ষার্থীরা হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে প্রাধ্যক্ষ কক্ষে তালা দেয় এবং ২ দিনের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উন্নয়ন কাজ শুরু না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অফিসে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে সালাম-বরকত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মাসুফ আহমেদ বলেন, হলের অভ্যন্তরীণ নানা সমস্যা নিয়ে আমরা বারবার হল প্রশাসনকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছি। কিন্তু কোনো ফলাফল পাওয়া যায়নি। উন্নয়ন কাজে হল প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব রয়েছে। এখানে একজন শিক্ষার্থীর প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা পূরণ হয় না অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যান্য হলগুলোতে ঠিকই উন্নয়ন কাজ হচ্ছে, কিন্তু সে অনুযায়ী আমাদের হলে কোনো কাজ হচ্ছে না৷ হল প্রশাসন রুটিন অনুযায়ী কোনো কাজ করছে না ফলে এসব সংকটও সমাধান হচ্ছে না।
বিক্ষোভে একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, আমাদের হলে সামান্য বৃষ্টিতে হল সংলগ্ন রাস্তা চলাচলের জন্য অনুপযুক্ত হয়ে পড়ে। খেলাধুলার জন্য হল মাঠে উপযুক্ত কোনো ব্যবস্থা নেই৷ এছাড়া হলে খাবার পানির ফিল্টার অকেজো এবং হলের ড্রাইনিংয়ে খাবারের পর্যাপ্ত মনিটরিং করা হয় না৷ হল প্রশাসনকে সমস্যাগুলোর নিয়ে বারবার লিখিতভাবে জানানো হলেও হল প্রশাসন সমস্যা সমাধানে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
বিক্ষোভ সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদ সৌভিক বলেন, একটি হলের যে যে সুযোগ সুবিধা থাকার কথা আমরা সে সুযোগ সুবিধা পাচ্ছি না। আমাদের হলের পয়:নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভালো না, হলের সামনে পানি জমে থাকে, সিয়াম চত্বরে পানির কারণে বসা যায় না, খেলার মাঠের অবস্থা ভালো না, বিদ্যুতের সমস্যা। এত সমস্যা থাকায় আমরা পড়াশুনায় মন বসাতে পারছি না। এ প্রভোস্ট এতদিন ধরে দায়িত্ব পালন করেছে হলের উন্নয়নে কোন কাজ করেনি। আমরা এই প্রভোস্টের পদত্যাগ চাই।
সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রাজু আহমেদ বলেন, হলে শিক্ষার্থীদের জন্য একটা সেলুন পর্যন্ত নেই। খাবার দাবার ঠিকমত মনিটরিং করা হচ্ছে না। হলের লাইট-ফ্যানসহ বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে কিন্তু সেগুলো সময়মত ঠিক করা হয় না। এমনকি প্রোভোস্ট স্যার ঠিক মতো হলে সময় দেন না। তাই এই প্রোভস্টের পরিবর্তে আমরা নতুন প্রভোস্ট চাই।
এ বিষয়ে শহীদ সালাম বরকত হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সুকল্যাণ কুমার কুন্ডু জানান, শিক্ষার্থীদের দাবির সাথে আমার পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। তাদের দাবিগুলো আমারও দাবি৷ আমি সমস্যাগুলোর ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বারবার অবগত করেছি কিন্তু সেখান থেকে পর্যাপ্ত বাজেট দেওয়া হয়নি৷ তাই হলের সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে পারছি না৷
হলের সমস্যা সমধানে কোনো সদিচ্ছার অভাব রয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি না আমার কোনো সদিচ্ছার অভাব রয়েছে বরং আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি হলের যাবতীয় সমস্যা সমাধান করার৷ প্রশাসন যদি আমাকে সাপোর্ট না দেয় তাহলে আমি কিভাবে কাজ করবো, প্রশাসন থেকে বাজেট আসে না৷ বাজেটের স্বল্পতার কারণে প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারছি না।
এম জি