জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা দিল ছাত্রদল
জাবি প্রতিনিধি প্রকাশ: ২০২৩-১১-০১ ১৩:৩০:২৮
বিএনপির ডাকা দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রধান ফটকসহ সবকটি ফটকে আজ সকালে তালা লাগিয়েছিল শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। খবর পেয়ে এর ৩০ মিনিটের মধ্যেই সবগুলো ফটকের তালা ভেঙে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (১ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন প্রধান ফটকে তালা লাগান ছাত্রদলের তিনজন কর্মী। একই সময়ে মীর মশাররফ হোসেন হল সংলগ্ন গেইট, জয় বাংলা গেইট (প্রান্তিক গেইট), বিশমাইল গেইট,ইসলামনগর গেইট ও গেরুয়া গেইটে তালা লাগান দলের নেতাকর্মীরা। তবে তালা লাগানোর কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিস ও নিরাপত্তা শাখা সব গেইটের তালা ভেঙে ফেলে।
মূল ফটকে তালা লাগানোর দশমিনিটের মাথায় সহকারী প্রক্টর এস এম এ মওদুদ আহমেদ ও ইনস্টিটিউট অব বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনের সহযোগী অধ্যাপক পলাশ সাহা সেখানে উপস্থিত হন। পরে সহকারী প্রক্টরের নির্দেশনায় তালা ভাঙেন নিরাপত্তা কর্মীরা।
প্রধান ফটকে দায়িত্বরত আনসার সদস্য সাইফুল ইসলাম ও নিরাপত্তা প্রহরী শাহ আলম জানান, সকাল সাড়ে সাতটা দিকে দুইজন মোটরসাইকেল আরোহী এসে হঠাৎ করে গেইট বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয়। আমরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তালা লাগিয়ে দিয়ে চলে যায় তারা। পরে কন্ট্রোল রুমে জানালে তালা ভেঙে ফেলতে বলে। আধাঘণ্টার মধ্যেই আমরা তালা খুলে দেই।
সবগুলো প্রবেশপথে একযোগে তালা লাগানোয় বিপাকে পড়েন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশরত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গাড়ি বাইরে অপেক্ষা করতে হয়। আধাঘন্টা পর জয় বাংলা গেইট ও বিশমাইল গেইটের তালা ভেঙে ফেলা হলে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ও দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ছাত্রদলের ৫-৭ জন নেতাকর্মী মোটরসাইকেল যোগে এসে গেইটগুলোতে তালা লাগিয়ে দেন। এ সময় তালার সঙ্গে ‘সবার্ত্মক অবরোধ’ লেখা সংবলিত ব্যানার ঝুলিয়ে দেন তারা। ছাত্রদলের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদলের মীর মশাররফ হোসেন হলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন, জোবায়ের আল মাহমুদ, নাইমুল হাসান কৌশিক, রেজাউল আমিন, সাহানুর রহমান, এম আর মুরাদ, রাজন মিয়া, নিশাত আব্দুল্লাহ, মুত্তাশিন ফুয়াদ, রাজু, আলামিন প্রমুখ।দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রবেশপথে তালা দেওয়া হয়েছে বলে জানান ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
কেন্দ্র ঘোষিত তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ক্যাম্পাসের ফটকগুলোতে তালা লাগানো হয়েছে জানিয়ে ছাত্রদল নেতা নাইমুল হাসান কৌশিক বলেন, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল এ কর্মসূচি পালন করেছে। একই সঙ্গে ছাত্রলীগকে এই বার্তা দিচ্ছে যে অবিলম্বে তাদের সন্ত্রাসী কার্যক্রম বন্ধ না করলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে জাবি ছাত্রদল দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবে। ছাত্রলীগের প্রশাসনের মদদপুষ্ট হয়ে ছাত্রলীগের সকল সন্ত্রাসী কার্যক্রমকে প্রতিহত করে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনকে ত্বরান্বিত করবে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা বন্ধ করে শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বজায় রাখুন। পাশাপাশি দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে বিগত দিনের অন্যায়ের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চেয়ে দেশের মানুষের যৌক্তিক আন্দোলনে পাশে থেকে কৃতকর্মের কিছুটা প্রায়শ্চিত্ত করুন। অন্যথায় রাজপথে আপনাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে সহকারী প্রক্টর মওদুদ আহমেদ বলেন, আমি ব্যক্তিগত কাজেই সকালে বের হয়েছিলাম। মীর মশাররফ হোসেন হলের ফটক দিয়ে বের হওয়ার সময় দেখি ফটক তালাবদ্ধ। পরে প্রধান ফটকে এসে দেখি সেখানেও তালা দেওয়া হয়েছে ও ছাত্রদলের ব্যানার ঝুলছে। তবে কারা তালা লাগিয়েছে আমাদের চোখে পড়েনি। আমি দ্রুত তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি। কারণ এরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসগুলো প্রবেশ করবে, শিক্ষার্থীরা ক্লাসে আসবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার জন্যই নিরাপত্তা অফিসকে দ্রুত সবগুলো তালা ভেঙে ফেলতে বলেছি।
এম জি