টাকা পারিশোধের শর্তে ফিরছে সিটিসেল
আপডেট: ২০১৬-১১-০৫ ১০:২৪:৩২
১৯ নভেম্বরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ করার শর্তে বেসরকারি মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের বন্ধ তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
বৃহস্পতিবার আদালত তার নির্দেশনায় বলেছেন, সিটিসেল নির্ধারিত তারিখের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে বিটিআরসি আবারও তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে।
তরঙ্গ বরাদ্দ খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে সিটিসেলের আপিল আবেদনের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ বিটিআরসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। সিটিসেলের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান।
আইনজীবীরা জানান, বাংলাদেশের সবচেয়ে পুরোনো মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সিটিসেলকে ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ওইদিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করা হলে বিটিআরসিকে ফের তরঙ্গ বরাদ্দ বন্ধ করতেও বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
সিটিসেলের পাওনা টাকা না দেওয়ায় গত ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)।
বিটিআরসির এই সিদ্ধান্ত স্থগিত চেয়ে গত ২৪ অক্টোবর আবেদন করে সিটিসেল। এর আগে গত ২৫ অক্টোবর সিটিসেল বন্ধে সরকারের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে বিষয়টি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বিটিআরসি দাবি করেছে, সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যদিও এই পাওনা নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য রয়েছে। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ালে আপিল বিভাগ ছয় সপ্তাহের মধ্যে পাওনা টাকার তিন ভাগের দুই ভাগ এবং অবশিষ্ট টাকা দুই মাসের মধ্যে জমা দেওয়ার জন্য সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সিটিসেল তাদের হিসাবমত বকেয়া টাকার মধ্যে ১৩০ কোটি বিটিআরসিকে এবং ১৪ কোটি টাকা এনবিআরের খাতে জমা করে। কিন্তু বিটিআরসি দাবি করে প্রথম কিস্তির টাকার অঙ্ক ৩১৮ কোটি টাকা। টাকার অঙ্ক নিয়ে দুই পক্ষের এই মতবিরোধের মধ্যে বিটিআরসি সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্ধ স্থগিত করে দেন।
এ পরিস্থিতিতে তরঙ্গ বরাদ্ধ ফিরে পেতে সিটিসেল আপিল বিভাগে এই আবেদন করে। এ প্রসঙ্গে সিটিসেলের আইনজীবী মাহবুব শফিক বলেন, আদালত যে কিস্তি নির্ধারণ করে দেন তা দুই পক্ষের সম্মতিক্রমে টাকার অঙ্ক নিদ্দিষ্ট করার নির্দেশনা ছিলো। বিটিআরসি সিটিসেলকে ১০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ বরাদ্ধ দেওয়ার কথা ছিলো।
কিন্তু তারা বরাদ্ধ দেয় ৮ দশমিক ৮২ মেগাহার্টজ। এই হিসাবে বিটিআরসির কিস্তি পাওনা হবে ১৪৪ কোটি টাকা। সে টাকা সিটিসেল জমা দিলেও বিটিআরসি তরঙ্গ বরাদ্ধ স্থগিত করে দেন।