বিয়ের জন্য নিলামে মেয়েরা
প্রকাশ: ২০১৭-০২-০৪ ১০:১০:৫৫
বাবা-মা দাঁড়িয়ে থেকে মেলায় মেয়ের জন্য দর হাঁকেন। বিবাহযোগ্য পাত্র বা তার পরিবার পাত্রীর জন্য দর হাঁকেন। সওদা মঞ্জুর হলে পাত্রের হাতে পরিবার মধুরেণ সমপায়েৎ করেন।
বিভিন্ন বয়সের নারীদের এই মেলায় অংশ নেন শুধু জীবনসঙ্গীকে খুঁজে বের করতে। তবে শর্ত একটাই, বিবাহেচ্ছু মেয়েদের কুমারী হওয়াটা বাধ্যতামূলক।
আসলে বুলগেরিয়ার স্তারা জাগোরা নামে এই অঞ্চলের রোমা জনগোষ্ঠীর মেয়েরা এভাবেই বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। রোমা জনজাতি মূলত তামার বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে থাকে। এটাই এদের রুজি-রুটি। বুলগেরিয়াতে এদেরকে অনেকে কালাইদঝি বলেও ডাকে।
দারিদ্র এদের নিত্যসঙ্গী। ফলে, বিবাহের মতো ব্যয়বহুল আনুষ্ঠানের আড়ম্বর এদের পক্ষে সম্ভব হয় না। তাই, এই মেলাই রোমা জনজাতির কাছে জীবনসঙ্গিনী খুঁজে পাওয়ার একমাত্র জায়গা। পাত্রীর সাজে মেলায় আসা মেয়েদের শুধু পছন্দ করলেই হবে না, পুরুষদের এর জন্য খসাতে হয় পকেটের কড়ি। কারণ, যে পুরুষের যে মেয়েকে জীবনসঙ্গিনী হিসাবে পছন্দ হবে, তার জন্য তাকে যথার্থ দাম দিতে হয়। কয়েক লক্ষ টাকা পর্যন্ত দর ওঠে মেলায় পাত্রী হিসাবে যোগ দেওয়া মেয়েদের।
কোন পাত্রী কেমন দর পাবেন, তা নির্ভর করে তার সৌন্দর্য থেকে শুরু করে সাজপোশাক, আচার ব্যবহারের উপরে। মেলার নিয়ম অনুসারে, মেয়েরা যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন অথবা মেলার জন্য প্রস্তুত মঞ্চেও নিজেদের পাত্রী হিসাবে তুলে ধরতে পারেন। মঞ্চে ওঠা মেয়েদের জন্য নিলামের মতো দরও হাঁকাহাঁকি হয়। আবার পুরুষরা মঞ্চে থাকা মেয়েদের সঙ্গে সেখানে নাচা-গানাতেও অংশ নিতে পারেন। এরপরই পছন্দের মেয়েদের জন্য দর হাঁকতে পারেন তিনি।
এই মেলায় অংশ নিতে মেয়েদের সাজপোশাকও হতে হয় চটকদার। এখানে নাবালক দম্পতি দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না। ফলে, ১৩ বছরের মেয়ের সমবয়সী পুরুষসঙ্গী এখানে একেবারেই বিরল নয়। এমনও দেখা গিয়েছে, বাবা-মায়েরা ছেলে-মেয়েকে অল্প বয়সেই এই মেলার অংশগ্রহণের জন্য নিয়ে এসেছে। কারণ, বাবা-মায়েদের ধারণা, বেশি দেরি করলে হয়তো ছেলে-মেয়েকে সারা জীবন চিরকুমার বা চিরকুমারী হয়েই কাটাতে হবে। বছরে চার বার এই মেলা বসে। সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় বসন্তের মেলা।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস