পেলভিসে অসহ্য যন্ত্রণা? অবহেলা নয়

প্রকাশ: ২০১৭-০৩-২৯ ১৬:০৬:৫০


pelvic-painমাঝেমধ্যেই দেখা যায় কোনও মেয়ে তলপেটের নিচ থেকে কোমর পর্যন্ত পেলভিসের ব্যথায় হঠাৎই কাবু হয়ে পড়েছে৷ এই অংশে থাকে হাড়, পেশি, লিগামেণ্ট, জরায়ু, ফ্যালোপিয়ন টিউব, গর্ভাশয়, মূত্রথলি, মলদ্বার, অ্যাপেনডিক্স৷ আর এগুলির কোনও একটির জন্যই পেলভিক পেইন হতে পারে৷ আবার ঋতুস্রাবের ব্যথার জন্যও অনেকসময় কষ্ট হয়৷ সাধারণত পরবর্তী ঋতুস্রাব হওয়ার দু’সপ্তাহ আগে ডিম্বাণু নিঃসরণের সময়ে পেলভিক পেইন হয়ে থাকে৷ কীভাবে মুক্তি পাবেন এই ব্যথা থেকে? পরামর্শ দিচ্ছেন পিয়ারলেস হসপিটালের বিশিষ্ট গাইনোকলজিস্ট ডা. রূপকরঞ্জন রায়৷

ব্যথা কখন হয়: 

নারীদের একটোপিক প্রেগন্যান্সি হলে প্রেগন্যান্সি ফ্যালোপিয়ন টিউবে হয়৷ এটি একটি প্রাণঘাতী অসুখ, যেখানে প্রাথমিক অবস্থায় সাধারণত কোনও উপসর্গ থাকে না৷ ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গা গোলানো, বমি, পেলভিসে ব্যথা হলে গ্যাসের ব্যথা বলে অনেকে ভুল করেন৷ তাই যৌনক্রিয়ায় সক্রিয় কোনও নারীর পেলভিসে ব্যথা হলে অবহেলা করা উচিত নয়৷ ব্যথার পিছনে প্রেগন্যান্সিজনিত কারণ আছে কি না বা গর্ভপাত হয়েছে কি না তা দেখা উচিত৷

মূত্রনালিতে সংক্রমণ, জরায়ুতে ফাইব্রয়েড এন্ডোমেট্রিওসিস, ওভারিয়ান সিস্ট, কোনও কারণে ইনফেকশন বা সংক্রমণ হলে, ক্রনিক পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ, কোষ্ঠকাঠিন্য, অ্যাপেনডিক্স বা আগে কোনও অপারেশন হলে পেলভিক পেইন হতে পারে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে পেলভিসে ব্যথা ক্যানসারের জন্য হয়ে থাকে৷

বিপদ যখন:

পেলভিসে ব্যথার সঙ্গে ভ্যাজাইনাল ব্লিডিং৷ ঋতুস্রাবের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা৷ সহবাসের পর রক্তক্ষরণ৷ মূত্র-মলের সঙ্গে ঘনঘন রক্তক্ষরণ ও সঙ্গে জ্বর৷

চিকিৎসা:

প্রথমে রোগীর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা করা হয়৷ এরপর মূত্র পরীক্ষা, প্রেগন্যান্সি টেস্ট, আলট্রাসনোগ্রাফি ও কিছু প্রাসঙ্গিক রক্ত পরীক্ষা করা হয়৷ এসব করেও কিছু ধরা না পড়লে সিটি স্ক্যান করা হয়৷ তারপরেও কিছু না জানা গেলে ডায়াগনস্টিক ল্যাপারোস্কোপি করে পেটের ভিতরের সম্পূর্ণ ছবি দেখা হয়৷ এরপর পেলভিসে ব্যথার পিছনে যে রোগের কারণ ধরা পড়বে তার চিকিৎসা করা হয়৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে আবার প্রয়োজন পড়লে সার্জারিও করা হয়৷

যে কোনও বয়সেই পেলভিক পেইন হতে পারে৷ অনেক সময়ই ঋতুস্রাবের সময় পেলভিসে ব্যথা হলে কিশোরীদের অভিভাবকরা চিন্তিত হয়ে পড়েন৷ যদি অনেকদিন ধরেই পেটের নিচের দিকে বা ঋতুস্রাবের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা হয় তাহলে অযথা আতঙ্কে ভুগবেন না৷ দুশ্চিন্তা না করে ব্যথার পিছনে কোনও গুরুতর কারণ আছে কি না সে বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ পেলভিসে ব্যথার এত রকমের কারণ হতে পারে যে, আগে থেকে সতর্কতার কোনও অবকাশ থাকে না৷ তবু পেলভিক ব্যথা হলে অযথা ভয় পাবেন না, আবার দীর্ঘদিন ধরে ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে অবহেলা করবেন না৷ সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।