আরও সাত কোম্পানি জমি পেল বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে
নিজস্ব প্রতিবেদক আপডেট: ২০১৮-১২-১০ ১৯:৫৪:৩৫
আরও সাত কোম্পানি জমি বরাদ্ধ পেয়েছে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটির ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে। ইতোমধ্যে ওই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে তাদের প্লট বুঝিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ।
আজ সোমবার, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এই চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে। এর মাধ্যমে আগামী ৪০ বছরের জন্য বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে তারা এ জমি ব্যবহার করবে। এর মধ্যে ডাটা সফট, আমরা হোল্ডিংস, ডেভ নেট লিমিটেড, স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড, মিডিয়া সফট ডাটা সিস্টেম লিমিটেড, ইউ ওয়াই সিস্টেম লিমিটেড প্রতিষ্ঠানসমূহ বিনিয়োগের সুযোগ পেলো। এর আগে এসবি টেল এন্টারপ্রাইজ গত ২৮ নভেম্বর, তারিখে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়।
বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে ২.৭৫ একর জায়গা বরাদ্দ পেয়েছে ডাটা সফট। কোম্পানিটি এখানে আইটি/আইটিইএস, ডিভাইস মেনুফ্যাকচারিং ও এসেম্বল করবে। এ লক্ষ্যে কোম্পানিটি ৮০.৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে, সেইসঙ্গে ২৫০ জনের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করবে।
আমরা হোল্ডিংস এর অনুকূলে ৩.৫০ একর জমি বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে কোম্পানিটি মোবাইল ফ্যাক্টরি স্থাপন করবে এবং আগামী তিন বছরে ২৩১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এখানে প্রায় ৫০০ জনের কর্মসংস্থান হবে।
ডেভ নেট লিমিটেডকে দেওয়া হয়েছে ২ একর জমি। এখানে তারা আইটি সার্ভিস, আইওটি প্রোডাক্ট, ডকুমেন্ট স্ক্যানিং, রেকর্ড ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কাজ করবে। কোম্পানিটি এখানে ২০.৭৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে, এতে করে প্রায় ৪০০ জনের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।
স্পেকট্রাম ইঞ্জিনিয়ারিং কনসোর্টিয়াম লিমিটেড পাচ্ছে ২ একর জমি। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটিতে তারা ডাটা সেন্টার ও আইটি প্রোডাক্ট উৎপাদন করবে। কোম্পানিটি এখানে বিনিয়োগ করছে ৭৫ কোটি টাকা।
মিডিয়া সফট ডাটা সিস্টেম লিমিটেডকে দেওয়া হচ্ছে ১ একর জমি। হার্ডওয়্যার পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যে এই কোম্পানিটি বিনিয়োগ করবে ১১.৩৮ কোটি টাকা, এখানে কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে প্রায় ৬০০ জনের।
ইউ ওয়াই সিস্টেম লিমিটেডের অনুকূলে যাচ্ছে ১ একর জমি। কোম্পানিটি এখানে প্রিন্টিড সার্কিট বোর্ড উৎপাদন এবং স্মার্ট হোম ও ফ্লিট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম নিয়ে কাজ করবে। প্রায় ৫০০ জনের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে কোম্পানিটি এখানে বিনিয়োগ করছে ১৯ কোটি টাকা।
এছাড়া এসবি টেল এন্টারপ্রাইজ গত ২৮ নভেম্বর, তারিখে বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়। তারা এখানে মোবাইল ফোন সংযোজন ও উৎপাদন করবে। এই কোম্পানিটি বাংলাদেশে সিম্ফোনি মোবাইল ফোন সংযোজন ও বাজারজাতকরণ করে। তাদেরকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৮.১৬ একর জমি। কোম্পানিটি এখানে আগামী তিন বছরের মধ্যে প্রায় ১২০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এবং প্রায় ৩০০০ লোকের কর্মসংস্থান হবে।
এই চুক্তির মাধ্যমে যে ৭টি কোম্পানি বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটির ইন্ডাস্ট্রিয়াল জোনে ২০.৪১ একর জমি বরাদ্দ পেলো, তারা হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, আইওটি, বিপিও, ট্রেনিং সেন্টার, ডাটা-সেন্টার, মোবাইল ফোন সংযোজন ও উৎপাদন, আরঅ্যান্ডডি প্রভৃতি উচ্চ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে, যা এই হাই-টেক পার্কে প্রায় ৫২৫০ লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। কোম্পানিগুলো এখানে প্রায় ৫৫৮ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি দেশের প্রথম হাই-টেক পার্ক। এখানে কাজ শুরু করার জন্য প্রথম পর্যায়ে প্রাপ্ত ২৩২ একর জমিকে ৫টি ব্লকে ভাগ করে ডেভেলপার নিয়োগ করা হয়। পরবর্তীতে পার্ক সংলগ্ন ৯৭.৩৩ একর জমি বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের অনুকূলে বরাদ্দ পাওয়া যায়। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সরাসরি বিনিয়োগকারীদের অনুকূলে প্রথম পর্যায়ে গত ২৫ সেপ্টেম্বর ৯টি ও দ্বিতীয় পর্যায়ে আজ ৭টি কোম্পানিকে বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (সচিব) হোসনে আরা বেগম। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের আওতায় নির্মিত/নির্মিতব্য হাই-টেক পার্ক সমূহে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। বিভিন্ন হাই-টেক পার্কে বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য লন্ডনে সেমিনার, রোডশো-সহ বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে। কালিয়াকৈরে ৩৫৫ একর জমির ওপর স্থাপিত ‘বঙ্গবন্ধু হাই-টেক সিটি’ বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ফ্লাগশিপ প্রকল্প। আমরা আশা করি হাই-টেক পার্ক/সফটওয়ার টেকনোলজি পার্কগুলো সফটওয়্যার, ইলেকট্রনিক্স ইত্যাদি পণ্য রপ্তানি মূল কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে।’
চুক্তি স্বাক্ষর অনু্ষ্ঠানে কোম্পানিসমূহের প্রতিনিধি এবং বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সানবিডি/জিইউ