টুইটারে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ

সান বিডি ডেস্ক প্রকাশ: ২০১৯-১০-৩১ ১৫:২৭:২৬


উদ্দেশ্যে প্রণোদিত প্রচারণা, বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং ভুয়া তথ্যর ব্যাপক ঝুঁকির কারণে টুইটার কর্তৃপক্ষ বিশ্বব্যাপী তাদের প্ল্যাটফর্মে সব ধরনের রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করেছে।

নতুন এই নিষেধাজ্ঞা ২২ নভেম্বর থেকে কার্যকর হবে, যা যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন এবং আগামী বছর মার্কিন নির্বাচনে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে। টুইটারের পদক্ষেপকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী শিবির ‘খুবই নির্বোধ’ এবং ‘রক্ষণশীলদের চুপ করিয়ে দিতে আরো একটি প্রচেষ্টা’ হিসেবে সমালোচনা করেছে।

টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী জ্যাক ডরসি একাধিক টুইটে নিষেধাজ্ঞার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক বার্তা পৌঁছানোর বিষয়, কেনার বিষয় নয়।’ তিনি আরো বলেন, ‘এ ধরনের বিজ্ঞাপনগুলো জনগণের ওপর জোর করে উদ্দেশ্যে প্রণোদিত রাজনৈতিক বার্তা চাপিয়ে দেয়। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের অর্থ আয়ের জন্য এ কাজে আপোস করা উচিত নয়।’

জ্যাক ডরসি আরো বলেন, ‘যদিও ইন্টারনেট বিজ্ঞাপন বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপনদাতাদের জন্য অবিশ্বাস্যভাবে শক্তিশালী এবং কার্যকর ভূমিকা পালন করে, কিন্তু এই শক্তি রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি নিয়ে আসে। রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনগুলো লাখ লাখ মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করতে, ভোটকে প্রভাবিত করতে ব্যবহার করা যেতে পারে।’

তার মতে, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন যাচাইবিহীন বিভ্রান্তিকর তথ্য এবং ভুয়া তথ্য ছড়ানোর ঝুঁকি বৃদ্ধি করে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০২০ সালের নির্বাচনী শিবির এই নিষেধাজ্ঞাকে টুইটারের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য অত্যন্ত মূর্খ সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছে। কারণ হিসেবে বলেছে, রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন না থাকলে টুইটার সম্ভাব্য কয়েকশো মিলিয়ন ডলার আয় হারাবে।

ট্রাম্পের প্রচারণা শিবিরের ম্যানেজার ব্রাড পারস্কেল বলেন, ‘এই নিষেধাজ্ঞা রক্ষণশীলদের চুপ করিয়ে দিতে বামদের আরো একটি প্রচেষ্টা। কারণ টুইটার জানে যে তাদের প্ল্যাটফর্মে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সবচেয়ে জোরালো কার্যক্রম রয়েছে।’

নিষেধাজ্ঞার চূড়ান্ত নীতিমালা আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে ২২ নভেম্বরের মধ্যে প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে টুইটার। জ্যাক জরসি বলেন, ‘আমরা মুক্ত মত প্রকাশের বিরুদ্ধে নয় বরং অর্থের বিনিময়ে রাজনৈতিক মত পৌঁছে দেওয়ার বিরুদ্ধে।’

আগামী বছরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বী জো বাইডেনকে হেয় করে গত সেপ্টেম্বরে ট্রাম্প শিবিরের প্রচারিত একটি ভিডিও টুইটার, ফেসবুক এবং গুগল সরিয়ে নিতে অস্বীকৃতি জানালে রাজনৈতিক বিজ্ঞাপনের বিষয়টি উদ্ভুত পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিল।

সমালোচকরা চান, ফেসবুকেও রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা হোক। তবে ফেসবুক রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন বন্ধ না করার সিদ্ধান্তের কথা ইতিমধ্যে জানিয়েছে। ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ গত সপ্তাহে মার্কিন কংগ্রেসে বলেছেন, তাদের প্ল্যাটফর্ম রাজনীতিবিদদের বাকস্বাধীনতা অধিকারের পক্ষে রয়েছে। তার মতে, কোনো প্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক বা গণতান্ত্রিক সংবাদকে সেন্সর করা সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।

রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ টুইটারের একটি বিশাল পদক্ষেপ। অনেকের মতে, জ্যাক ডরসির পক্ষে এটি করা অনেক সহজ কারণ, টুইটার রাজনৈতিক বিজ্ঞাপন থেকে ফেসবুকের মতো এতো অর্থ উপার্জন করে না।

অভিযোগ রয়েছে, ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে রাশিয়ার সরকারের সঙ্গে যুক্ত একটি ইন্টারনেট রিসার্চ গ্রুপ ট্রাম্পের পক্ষে ফেসবুকে হাজার হাজার বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ প্রদান করেছিল।
সানবিডি/ঢাকা/এসএস