নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও বইমেলায় ব-দ্বীপ প্রকাশন’র স্টলে শোভা পাচ্ছে চরম ইসলাম বিরোধী অসংখ্য বই
আপডেট: ২০১৬-০২-১৫ ২০:০৮:৩৩
এবারে বইমেলায় ব-দ্বীপ প্রকাশনার স্টলে শোভা পাচ্ছে চরম ইসলাম বিদ্বেষী এক বই, নাম- “ইসলামের ভূমিকা ও সমাজ উন্নয়নে সমস্যা”। বইটির লেখক শামসুজ্জোহা মানিক। বইটির প্রতিটি পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় রয়েছে মুসলমানদের আল্লাহ, নবী ও ইসলামকে নানান অশ্লীল গালাগালিতে ভরপুর।
১) বইটির ৩২ নং পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে:
“আল্লাহ তো মানুষেরই সৃষ্টি। কাজেই এটা মুহাম্মদের মানস সৃষ্টি। মুহাম্মদের কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল এই রকম এক সন্ত্রাসী ও স্বেচ্ছাচারী মহাশক্তিমান অলৌকিক সত্তার কল্পনা এবং তার সর্বশ্রেষ্ঠ দাস প্রতিনিধি স্বরূপ তাঁর নিজেকে।” (অধ্যায় : ইসলাম ও নিরঙ্কুশ একত্ববাদ, পৃষ্ঠা: ৩২)
২) বইটির ৩৬ নং পৃষ্ঠায় বলা হচ্ছে:
“এখন স্বভাবতই প্রশ্ন তোলা যায়, আল্লাহ্র এই প্রকৃতি বা স্বভাবে আছে কোন যুক্তি বা সঙ্গতি অথবা ন্যায়-নীতিবোধ? আল্লাহর প্রকৃতিই যদি এমন এক স্বেচ্ছাচারী ও বিকৃত মানসিকতাসম্পন্ন পীড়নবাদী বা ধর্ষকামীর হয় তবে এই আল্লাহ্র প্রকৃতি অনুসরণে মানুষ কোন চরিত্র অর্জন করতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।” (অধ্যায়: স্বৈরতন্ত ইসলামের এক অনিবার্যতা, পৃষ্ঠা: ৩৭)
“আমাদের দেশে সমাজ জীবনে নারীর তুলনামূলক অনুপস্থিতি এবং নারীর উপর ধর্ষবাদী পুরুষদের যৌন আগ্রাসন ও ধর্ষণের আধিক্য যে কোনও মানুষের চোখে পড়বে। এটা অবশ্য আমাদের দেশের একক অবস্থা নয়, সমগ্র মুসলিম পৃথিবীর অবস্থাই কম-বেশি এই রকম। (অধ্যায়- ইসলামের বিজয়ে নারীর পরাজয়, পৃষ্ঠা- ৫১)
৪) বইটির ১১০ নং পৃষ্ঠায় বলা হচ্ছে:
“মুহাম্মদ নিজ মতবাদ ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য কোনও কাজেই পিছপা ছিলেন না এবং তৎকালীন অর্ধসভ্য, দরিদ্র ও মরুময় আরবের মানদণ্ড অনুযায়ী নিজ স্থূল সম্ভোগের ক্ষেত্রেও কম যান নাই। আসলে তিনি ছিলেন অসাধারণ কূট, ধূর্ত ও নির্দয়।”
(অধ্যায়: ইসলামের অশুভ ভূমিকা, পৃষ্ঠা-১১০)
“বিশেষত ইসলাম ধর্ম এক ভয়ংকর সন্ত্রাসী ও ধর্ষকামী বা স্যাডিস্টিক একনায়কী ধর্ম। এই ধর্ষকামী বা স্যাডিস্টিক ধর্মের প্রচণ্ড প্রভাবের ফলে এ দেশে কোনও শুভ শক্তি মাথা তুলে দাড়াতে পারছে না।”
অধ্যায়: ইসলামের অশুভ ভূমিকা, পৃষ্ঠা-১১৪)
বলাবাহুল্য, ব-দ্বীপ প্রকাশনের শুধু একটি বই নয় বরং প্রতিটি বই ইসলাম নিয়ে গালাগালিতে ভরপুর। এবারের বইমেলায় তাদের স্টলে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছে একই ধরনের চরম ধর্মবিদ্বেষী অনেক বই। এগুলো হচ্ছে:
ক) বই- জিহাদ: জবরদস্তিমূলক ধর্মান্তকরণ, সাম্রাজ্যবাদ ও দাসত্বের উত্তরাধিকার। লেখক-এম এ খান।
খ) বই – ইসলাম ও আধুনিক সভ্যতা: লেখক- শামসুজ্জোহা মানিক
গ) বই- ইসলামে নারীর অবস্থান: শামসুজ্জোহা মানিক
ঘ) বই- ইসলাম বিতর্ক (প্রবন্ধ সংকলন): শামসুজ্জোহা মানিক
ঙ) বই- মুহাম্মদ, জিহাদ ও ইসলামের সহিংস প্রচার: লেখক-এম এ খান।
উল্লেখ্য, ব-দ্বীপ প্রকাশনী কুখ্যাত ইসলাম বিদ্বেষী প্রকাশনী যারা মূলত ‘বঙ্গরাষ্ট্র আন্দোলন’ বাংলাদেশে প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছে। বঙ্গরাষ্ট্র হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী এক মতবাদ, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিনষ্ট করে নতুন রাষ্ট্র ‘বঙ্গরাষ্ট্র’ গঠনের পরিকল্পনায় লিপ্ত। ব-দ্বীপ প্রকাশনী প্রকাশ্যে রাষ্ট্র ও ধর্ম বিরোধী বই ছাপানোয় ২০১৫ সালে তাকে কোন স্টল বরাদ্দ দেয়নি বইমেলা কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এইবার কি কারণে এ ধরনের একটি জঘন্য প্রকাশনীকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হলো তা সত্যিই আশ্চর্যজনক বিষয়।
আরো উল্লেখ্য, বাংলা একাডেমির নীতিমালা অনুযায়ী- রাষ্ট্র ও ধর্মকে কটাক্ষ করা হয় বইমেলায় এমন কোন বই ছাপানো যাবে না। বইমেলার নীতিমালা ১৩ এর ১৩ অনুচ্ছেদে বলা হচ্ছে- অশ্লীল ও রুচিগর্হিত বই প্রকাশ করলে স্টল বরাদ্দ বাতিল করা হবে। সেই সঙ্গে আর কোনো সময় সেই স্টলকে বরাদ্দ দেওয়া হবে না। এ কারণে বইমেলার শুরুতেই বাংলা একাডেমীর ডিজি শামসুজ্জামান খান সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশকদের উদ্দেশ্য করে বলেছিলো এবার কোন ধর্মীয় উস্কানিসূচক বই ছাপানো যাবে না।
কিন্তু এত স্পষ্ট নীতিমালা ও ঘোষণার পরও রাষ্ট্র ও ধর্মদ্রোহী ব-দ্বীপ প্রকাশনকে কেন স্টল বরাদ্দ দেওয়া হলো তা রীতিমত রহস্যের সৃষ্টি করেছে। একই সাথে কোন অদৃশ্য শক্তির ছত্রছায়ায় এ ধরনের একটি উগ্র ধর্মবিরোধী প্রকাশনী বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারছে তাও রহস্য আবৃত।
যেহেতু বইমেলা বাংলা একাডেমীর তত্ত্বাবধানে হয়, তাই আপনারা বাংলা একাডেমীর দায়িত্বশীলদের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলাপ করতে পারেন-
বাংলা একাডেমীর ফোন নম্বর:
৯৬৬০৯৩৩, ৮৬১৯৫৭৭ (মহাপরিচালক), ৮৬১৯৫৪৬, ৮৬২৮৪৪০ (পরিচালক),৮৬১৯৭১৫ (প্রধান গ্রন্থাগারিক)
৮৬১৯৩৬৪ (উপ-পরিচালক), ৮৬১৯৭৫০ (ব্যবস্থাপক)
ব-দ্বীপ প্রকাশন মূল অফিস:
৬৩, কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্স, ২৫৩- ২৫৪ এলিফ্যান্ট রোড, কাটাবন, ঢাকা-১২০৫
মোবাইল: ০১৫৫৭৭৯১৩৯৬
সূত্র: ইন্টারনেট
সানবিডি/ঢাকা/রাআ